নিজস্ব প্রতিবেদক।।
রাজশাহীর দুর্গাপুরে বিয়ের দাবিতে তিন দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছেন অনার্স পড়া এক কলেজছাত্রী (২২)। তিনি উপজেলার ঝালুকা ইউনিয়নের ঝালুকা গ্রামের সেনাসদস্য প্রেমিক সাগরের বাড়িতে এ অনশন করে আসছেন। সাগর ওই গ্রামের বাবর আলীর ছেলে। ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী একই গ্রামের বাসিন্দা।
এদিকে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশনের পর থেকেই পলাতক রয়েছে তার পরিবারের সকল সদস্য। এমন ঘটনায় প্রেমিক সাগর বিয়ে না করলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন বলে জানান প্রেমিকা।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী জানান, একই গ্রামের সাগরের সঙ্গে সে পড়াশোনা করে আসছিলেন। গত ২০১৮ সালে কলেজে পড়ার সময় তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
দীর্ঘ ৬ বছর ধরে সাগরের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। এমন সম্পর্ক তার পরিবারসহ প্রতিবেশীরাও জানেন। বিয়ের প্রলোভনে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও করেছে একাধিকবার সাগর। বিয়ের দাবি নিয়ে বিউটি এলাকার চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যের কাছেও গিয়েছেন।
গত এক বছর আগে সাগরের কর্মস্থল ময়মনসিংহ সেনা ক্যান্টনমেন্টে বিয়ের দাবি নিয়ে যান কলেজছাত্রী। এরপর ছেলের পরিবার থেকে যোগাযোগ করে তাকে বলা হয় এক মাসের মধ্যে তোমাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেব তুমি সেখান থেকে চলে আসো। চলে আসার পরে প্রায় ৮ মাস পার হলেও কেউ কোনো ব্যবস্থ্যা নেয়নি।
অবশেষে এর সমাধান না করায় তিনি গত ৫ ফ্রেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে প্রেমিক সাগরের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন।
তিনি আরো বলেন, এ অনশনে থাকা অবস্থায় তাকে মানসিকভাবে টর্চার করছে সাগরের লোকজন।
এদিকে এমন ঘটনায় সাগরের পরিবারের সকল সদস্য পলাতক থাকায় তাদের পরিবারের কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
কলেজছাত্রীর বাবা জানান, আমার মেয়ে বিয়ের দাবিতে আজ তিন দিন হলো সাগরের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। আমার মেয়ের সুষ্ঠু বিচার চাই। সাগর আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়ের সর্বনাশ করেছে।
এদিকে গত শনিবার রাতভর স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দিন ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান এর সমাধানের জন্য বৈঠক বসান। ওই বৈঠকে বিষয়টি ধামাচাপার জন্য ছেলের পক্ষ থেকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে মিমাংসার চাপ প্রয়োগ করা হয়।
মেয়ের পক্ষের লোকজন সেটাতে না রাজি হলে তাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এ সময় ওই মেয়ের কাছে স্বাক্ষর নিতে গেলে সে লিখিত কাগজটি ছিড়ে ফেলেন এবং তাদের বলেন, কোটি টাকা দিলেও সে বিয়ের দাবিতে অনশন করেই যাবেন।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য শাহাবুদ্দিন বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে বসেছিলাম। জুড়ি বোর্ডের সিদ্ধান্তে মেয়েকে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। তারা রাজি না হওয়ায় মিমাংসার করা সম্ভব হয়নি। পরে এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি, তারা যে ব্যবস্থা নেয় নেবে।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল ইসলাম বলেন, বিয়ের দাবিতে অনশনের খবর পেয়েছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/০৮/০৪/২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.