ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে কেন পড়বেন!

টাঙ্গাইলঃ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) সর্বপ্রথম চালু হয় ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বা ‘অপরাধতত্ব এবং পুলিশ বিজ্ঞান’। সংক্ষেপে যাকে বলা হয় ‘সিপিএস’ বিভাগ। বিভাগটির জনক বলা হয় অধ্যাপক ড. ইউসুফ শরীফ আহমেদ খানকে। কারণ, তার হাত ধরেই ২০০৩ সালে মাভাপ্রবিতে বিভাগটি চালু করা হয়। বর্তমানে বিভাগটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও চালু রয়েছে।

জানা যায়, দেশে কার্যকর অপরাধ দমন এবং অপরাধ প্রতিরোধে ব্যবহার করা যায় এমন বিষয়ে পাঠদান এবং জ্ঞানসৃষ্টির লক্ষ্যেই এই বিভাগটির সৃষ্টি। পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক পুলিশিং এবং উপাত্তভিত্তিক অপরাধ পূর্বাভাস প্রদানের মাধ্যমে অপরাধের মূলোৎপাটন করার লক্ষ্যে সম্ভাব্য সব বিষয়ের সমন্বয় সাধন করে এর পঠন-পাঠন।

এ বিভাগের শিক্ষকগণ কানাডা, ভারত, জার্মানি, তুরস্ক, হাঙ্গেরি এবং চীন থেকে অপরাধের বহুমাত্রিক বিষয়ে উচ্চশিক্ষা (পিএইচডি এবং এমএস ডিগ্রি) গ্রহণ করে এসেছেন এবং এখনো অধ্যয়ন করছেন। ভবিষ্যতে এ বিভাগে পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে পেশাজীবীদের জন্য মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

বিভাগের প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী রাহাত আহমেদ জানান, এখানে মূলত অপরাধ, অপরাধের কারণ, ধরন-প্রকৃতি বিশ্লেষণ এবং অপরাধ দমনের জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়ার প্রয়োগ-পদ্ধতিসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে পড়ানো হয়। এই বিষয় পড়ার ফলে আমরা বাংলাদেশ পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগ (CID), ঢাকাস্থ ফরেনসিক ল্যাব, সারদা পুলিশ একাডেমি, কোস্ট গার্ড চিটাগাং, শিশু উন্নয়ন সংস্থা, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, বাংলাদেশ প্রিজন, পুলিশ স্টাফ কলেজসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে হাতে-কলমে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

সবমিলিয়ে শিক্ষা জীবনে আমার পছন্দের তালিকায় ‘অপরাধতত্ব ও পুলিশ বিজ্ঞান’ প্রথম স্থানে এবং এ বিষয়ের শিক্ষার্থী হতে পেরে আমি গর্বিত।

সিপিএস বিভাগের ছাত্রী ফারাবি প্রমি জানান, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি বা বহুবিষয়ভিত্তিক বিভাগ। এটি অপরাধ বিষয়ক বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত অধ্যয়ন, অনুসন্ধান এবং গবেষণা করে থাকে।

সিপিএস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আওরঙ্গজেব আকন্দ বলেন, আধুনিক বিশ্বে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা, অপরাধ তদন্ত ও দমন নীতি, অপরাধী সংশোধন, ভিকটিম অধিকার সুরক্ষাসহ অপরাধ বিচার ব্যবস্থাপনাকে কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাত্ত্বিক ও গবেষণা লব্ধ জ্ঞানের উপর নির্ভর করা হয়। চাকরির ক্ষেত্রেও বিশেষায়িত ডিগ্রি থাকলে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। একই লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ২০০২-০৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে সিপিএস বিভাগের যাত্রা হয়।

তিনি বলেন, পাঠদান ও গবেষণার পাশাপাশি এখন জাতীয় পর্যায়ে বিশেষ করে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে বিভাগের গবেষণা ও অ্যাকাডেমিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে। সিপিএস বিভাগে আমাদের পাশাপাশি পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও বিচারকগণ শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন।

তিনি আরো বলেন, আমরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে চাই। আমাদের ল্যাবকে আধুনিক করতে আমরা কিছু যন্ত্রপাতি কিনেছি, ল্যাবের আরো কিছু যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। আমাদের ল্যাব ও শিক্ষক স্বল্পতা সত্ত্বেও শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু পড়াশোনাই নয়, খেলাধুলা ও সংস্কৃতি অঙ্গনেও তাদের কৃতিত্ব প্রদর্শন করছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৭/০৪/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Check Also

কর্মস্থলে যোগদান করলেন ইবির নতুন উপাচার্য

জামাল উদ্দীন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ কর্মস্থলে …