এইমাত্র পাওয়া

বাড়ছে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশে প্রচণ্ড তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তিতে নেই মানুষ। সবার মধ্যেই এক ধরনের হাঁসফাঁস অবস্থা। এর মধ্যে ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগে তাপপ্রবাহের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। ঘরের বাইরে বের হলেই ঘেমে অস্থির। ফলে শরীর থেকে সব পানি বের হয়ে যাচ্ছে। আবার রমজান মাস হওয়ায় দিনের বেলা পানি খেতে না পারায় সেই পানির শূন্যতাও পূরণ করা যাচ্ছে না। এতে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, হিট স্ট্রোক হচ্ছে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে তৈরি এক ধরনের জটিলতা। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এটি ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে বেশি হলেই হিট স্ট্রোক হতে পারে। এ সমস্যায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না পেলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আর গরমে অতিরিক্ত ঘামলে শরীর ডিহাইড্রেড হয়ে পড়ে।

এর ফলে ডায়রিয়া, হিট স্ট্রোক, কলেরা, শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, পেটের সমস্যা, সর্দি-জ্বর, হাঁপানি, গ্যাসের সমস্যা, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, ত্বকে সমস্যা, নানা ধরনের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু ও অন্তঃসত্ত্বাদের এ ঝুঁকি বেশি। তাই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) বা কলেরা হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ রোগী ভর্তি হচ্ছেন। গত এক সপ্তাহে তিন হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন। একই অবস্থা বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটেও। এখানে গত কয়েক দিনে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। আর রোগীদের চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমসহ নানা কারণে ডায়রিয়াসহ ঠান্ডা-জ্বর, নিউমোনিয়া এবং বিভিন্ন ধরনের রোগীর চাপ কিছুটা বেড়েছে। তাই গরমকালে শিশুদের ক্ষেত্রে সাবধানতা খুব বেশি প্রয়োজন। কারণ এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।

তিনি বলেন, গরমের এই পরিস্থিতিতে ফলের শরবত, ডাবের পানি, লেবুর শরবত, স্যালাইন, গ্লুকোজ এবং পুষ্টিকর রসাল ফল বেশি করে খেতে হবে। এতে শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে যাওয়ায় পানির চাহিদা পূরণ হবে। এ ছাড়া বিশুদ্ধ ও ফুটানো পানি পান করতে হবে। রাস্তার পাশে অস্বাস্থ্যকর ও উন্নত এবং পচা-বাসি খাবার খাওয়া যাবে না।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ সম্পর্কে এ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ বলেন, শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ১০৫-এর ওপর উঠলেও ঘাম হয় না, মাথাব্যথা হয়, অস্থিরতা দেখা দেয়, বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে, লাল র‌্যাশের মতো দেখা দেয়, বুক ধড়ফড়, শ্বাসকষ্ট, শরীরে ক্লান্তিভাব দেখা দেয়, চোখে ঝাপসা দেখা যায় এবং অবসাদ হয়। একসময় অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হয়, অজ্ঞান হয়েও যায় অনেকে। এটি বিপজ্জনক। এটি খুবই সিরিয়াস, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা না দিলে রোগী মারাও যেতে পারে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/০৫/০৪/২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.