শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ বছরের শুরুতে নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবই শিক্ষার্থীরা হাতে পাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় নানান বিতর্ক। সেই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলে উত্তাপ বাড়ায় ‘শরীফার গল্প’। সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের গল্প নিয়ে ওঠে আপত্তি।
বিষয়টি বেশি আলোচনায় আসে গত ১৯ জানুয়ারি। ওইদিন এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস জাতীয় শিক্ষক ফোরামের অনুষ্ঠানে বই থেকে ওই গল্পের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেন এবং অন্যদেরও ছেঁড়ার আহ্বান জানান। মুহূর্তেই ওই ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে। শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ‘শরীফার গল্প’ পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে পরিমার্জনের লক্ষ্যে ২৪ জানুয়ারি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে দেড় মাসের বেশি সময় পার হলেও এ নিয়ে কোনো প্রতিবেদন দিতে পারেননি কমিটির সদস্যরা।
কমিটির আহ্বায়ক ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদের ভাষ্য, ‘শুরুতে একজন অসুস্থ ছিলেন। পরে আমরা যার যার মতো করে দুইবার মিলিত হয়েছিলাম। রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে। এখন একদিন বসে সাইন করে জমা দেবো।’
ঠিক কবে নাগাদ প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব হবে— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখন তো রমজান মাস। সময় করে ওঠা কষ্ট। তাড়াতাড়িই জমা দেওয়ার চেষ্টা করবো। খুব বেশি দেরি আর করবো না। আমরা এটা জমা দিলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবি তা আমলে নেবে কি না, সেটা তাদের বিষয়। তারা আমলে নিলে সংশোধনী দেবে।’
তবে কমিটির সভা ও প্রতিবেদন দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে মন্তব্য করত রাজি হননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হালিম।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘তারা (বিশেষজ্ঞ কমিটি) কবে যে প্রতিবেদন দেবেন, সেটা আমার জানা নেই। আমরা আমাদের মতো করে বসেছি। জরুরি যে সংশোধনীগুলো রয়েছে, সেগুলো এপ্রিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেবো। এটা (শরীফার গল্প) নিয়ে যদি আগে মন্ত্রণালয় হয়ে আমাদের কাছে নির্দেশনা আসে, এটার সংশোধনীও দেবো।’
শিক্ষকরা যা বলছেন
সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইটি সাজানো হয়েছে ১০টি অধ্যায়ে। এর তৃতীয় অধ্যায়ে মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা অংশে রয়েছে শরীফার গল্প। এরই মধ্যে চলতি শিক্ষাবর্ষের আড়াই মাস ক্লাস শেষ। সেই হিসাবে আগামী মাসে এ অধ্যায়টি পড়ানোর কথা।
শিক্ষকরা বলছেন, তারা এ অধ্যায়টি বাদ দিয়ে পরের অধ্যায়ে চলে যাবেন নাকি দুই অধ্যায় পড়িয়ে সংশোধনীর জন্য অপেক্ষায় থাকবেন, তা নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন। গল্পটি সংশোধন করা হলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে তা দিলে ভালো হবে। তা না হলে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৩/০৩/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.