মাদ্রাসার নামে বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাত, তদন্ত কমিটি
বাগেরহাটঃ জেলার মোরেলগঞ্জে ভুয়া রেজুলেশন ও স্বাক্ষর জাল করে মসজিদ ও মাদ্রাসার নামে জেলা পরিষদের বরাদ্দের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাদ্রাসার সুপার অহিদুজ্জামান ও শিক্ষক মো. তাফাজ্জুল হোসাইন বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (১৯ জুলাই) অহিদুজ্জামান ও তাফাজ্জুল হোসাইনের বেতন স্থগিত করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, মোড়েলগঞ্জ উপজেলার শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার বাকি বিল্লাহ, সহকারী প্রকৌশলী শুভঙ্কর মন্ডল ও সোহেল রানা।
বারইখালী ইউনিয়নের মধ্য জোমাদ্দারপাড়া বাইতুন নূর জামে মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দান উন্নয়ন, বারইখালী-সুতালড়ী জামে মসজিদ উন্নয়ন ও বিএসএস দাখিল মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে বাগেরহাট জেলা পরিষদ থেকে ২ লাখ টাকা করে মোট ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। ঐ টাকা উত্তোলনের জন্য প্রকল্পে ও ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কমিটি গঠন করা হয়। প্রতিটি কমিটিতে মাদ্রাসা সুপার অহিদুজ্জামান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মো. তাফাজ্জুল হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই কমিটি ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করে এবং স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অর্থ উত্তোলন করে নেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে জালিয়াতির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা পরিষদ বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিচার দাবি জানানো হয়।
বিএসএস দাখিল মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকলেও তার নামের স্থলে ফখরুল ইসলামকে সভাপতি দেখানো হয়েছে।
জোমাদ্ধারপাড়া বাইতুন নুর জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, মসজিদ কমিটির কেউ জানেন না যে মসজিদের নামে দুই লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। যারা এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. তাফাজ্জুল হোসাইন বলেন, ‘তিনটি প্রকল্পের কোনোটাতেই আমি স্বাক্ষর করিনি। যদি কেউ আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার মো. অহিদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি মাদ্রাসার কাজে বাইরে আছেন বলে সহকারী সুপার মো. মাইনুদ্দিন হিরু জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাদ্রাসার সভাপতি এসএম তারেক সুলতান বলেন, ৩টি প্রকল্পের নামে টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। মাদ্রাসার সুপার অহিদুজ্জামান ও সহকারী শিক্ষক মো. তাফাজ্জুল হোসাইনের বেতন স্থগিত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা পরিষদ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঝুমুর বালা বলেন, ‘ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে আমাদের কাছ থেকে টাকা তুলে নিয়ে গেছে। আসলে আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব না যে কাগজপত্রগুলো ভুয়া কি-না, কারণ তারা কাগজপত্রগুলো যথাযথভাবে তৈরি করে দিয়েছে। তারা যে এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, সম্পাদক না এটা আমরা তদন্ত করে দেখব। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৯/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়