উৎসব ভাতা শতভাগ করণে দুই দশকের আন্দোলনের শেষ কোথায়?
ফিরোজ আলম: উৎসব ভাতার ইংরেজী নাম বোনাস। যার বাংলা উৎসব ভাতা, অধিবৃত্তি, উপরিলাভ অর্থাৎ প্রত্যাশার অতিরিক্ত কোন কিছু।সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত,এবং এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী বেতন ভাতা ও বোনাস নির্ধারিত হয়।কেউ বোনাস বা উৎসব ভাতা থেকে বঞ্চিত হলে তিনি শ্রম আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।বর্তমানে বোনাস ব্যবস্থায় চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।কারো বোনাস ৪ আনা,কারো ৮ আনা আবার কারো ১৬ আনা।অথচ উৎসবের রং সবারই সমান।উৎসব ভাতার এই অস্থিরতা ও বৈষম্য যেমনি চরম অসন্তোষ তৈরি করতে পারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মাঝে তেমনি অস্থিরতা বাড়াতে পারে শিক্ষক,শিক্ষাঙ্গন ও শিক্ষার গুনগত মানের মাঝে।
দেশে এখন এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩০ হাজারেরও বেশি।অর্থাৎ তা দেশের মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৯৭ শতাংশ।এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ছয় লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর পদ রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষক আছেন প্রায় সাড়ে চার লাখ। কর্মচারী আছেন প্রায় দেড় লাখ।ছায়ায় লাখ পদের মধ্যে সারাদেশে প্রায় ৫ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক রয়েছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের বেসিক বেতনের পুরো অংশ, সরকারি বিধি অনুযায়ী মূল বেতনের ২০ শতাংশ, বৈশাখী ভাতা এবং বার্ষিক ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট, বাড়িভাড়া বাবদ মাসে এক হাজার টাকা এবং চিকিৎসা ভাতা বাবদ ৫০০ টাকা সরকার দিলেও দুই ঈদে শিক্ষকদের জন্য মাত্র ২৫ শতাংশ এবং কর্মচারীদের জন্য ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা দেয়া হয়।এদিকে শিক্ষকদের শতভাগ ঈদ বোনাস বিষয়ে মন্ত্রণালয় চায় প্রস্তাব, মাউশি চায় নির্দেশনা এমন লুকোচুরি ও দৃশ্যমান।
এদিকে বৈশ্বিক পরিস্থিতি, মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বর্তমান বাজারে
এমপিভুক্ত শিক্ষকরা আসন্ন ঈদ উল আযহাকে অভিশপ্ত ভাবছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স করে প্রভাষক কিংবা সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে যোগ দেওয়াকে জীবনের নিকৃষ্ট সিদ্ধান্ত হিসেবে পরিতাপ করছে তারা। একজন সহকারী শিক্ষক বেতন হিসেবে সব মিলিয়ে ১২ হাজার ৭৫০ টাকা সাথে ঈদ বোনাস হিসেবে মাত্র তিন হাজার ১৫০ টাকা যেটুকু পান তা যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বল্প যোগ্যতার পিয়নের বেতনের চেয়ে ও কম।
অষ্টম শ্রেণী পাস একজন পিয়ন যেখানে কুরবানী পশু কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে , সেখানে নিম্ন মধ্যবিত্ত জাতির স্যার তথা শ্রেষ্ঠ সন্তান শিক্ষকরা লোক লজ্জায় মুখ লুকানো ছাড়া আর কি করার থাকতে পারে?এটি যতটা না এমপিভুক্ত শিক্ষকদের জন্য কষ্টের ততটাই বাঙ্গালি জাতির জন্য অপমানের নিকৃষ্ট স্বাক্ষী।
১৯৮০ সালে বেসরকারি শিক্ষকদের জাতীয় বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করার পর রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তিন মাস অন্তর অন্তর ৫০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ দেয়া শুরু হয়। । শিক্ষকদের রাজপথে দাবির মুখে ১৯৯০ সালে ৫০ শতাংশ বেতনকে ৭০ শতাংশে, ১৯৯৬ সালে ৭০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশে, ২০০১ সালে ৯০ শতাংশে এবং ২০০৫ সালে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে শতভাগে উন্নীত করা হয় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন।একথা সবারই জানা যে,শিক্ষকদের আন্দোলন ও দাবির মুখে ২০০৩/০৪ সালে তৎকালিন সরকার তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষকদের ২৫ শতাংশ এবং কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা যখন দিয়েছিলেন, তখন আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, পরবর্তী অর্থবছরে এ খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রেখে শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়া হবে। কিন্তু গত ২০ বছরে যখন তা হয়নি, তাহলে কি ধরে নিব যে তৎকালীন সরকার ক্ষমতায় না থাকা কি উৎসব ভাতা শতভাগকরনে প্রধান বাধা? জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নিকট শিক্ষকদের বিনীত সুরে জানতে চাওয়া যে,তাহলে কি তৎকালীন সরকার আসা পর্যন্ত শিক্ষকদের আবারো অপেক্ষা করতে হবে?একদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা:দীপু মনি বলছেন, এমপিভুক্ত শিক্ষকদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধান ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়,অন্যদিকে শিক্ষকদের বিশ বছরের প্রাণের দাবী উৎসব ভাতা শতভাগকরনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোটাও কি মঙ্গলজনক?
একথা সত্য যে, বৈশ্বিক মহামারী,রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনা,ব্যালেন্স অব পেমেন্ট এবং বৈদেশিক মুদ্রা,রাজস্ব আদায় ও আয়-ব্যয়ের ঘাটতি কমিয়ে আনা,মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা,জনতুষ্টি আর অর্থনীতি রক্ষার মধ্যে সমন্বয় করার মত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে সরকারকে। কিন্তু একথাও সত্যি যে,শিক্ষকদের ভাতে ও সন্মানে মারার সংকট উল্লেখিত চ্যালেঞ্জ থেকে কম কিসের?
সরকারি চাকুরিজীবিদের প্রতি বিদ্বেষ থেকে নয় বরং সকলের জ্ঞাতার্থে বলছি সরকারি চাকুরিজীবিদের প্রধানত ২টি উৎসব ভাতা থাকে।আর তা মূল বেতনের সমপরিমান। তাদের জন্য আরো রয়েছে ৪৫% মাসিক বাড়ি ভাড়া,নববর্ষের ২০% উৎসব ভাতা, প্রতিমাসের বেতনের সাথে এক সন্তান থাকলে কমপক্ষে ৫০০ টাকা,দুই সন্তান হলে ১০০০ টাকা, শিক্ষা সহায়তা ভাতা, চিকিৎসা ভাতা মাসিক সর্বনিন্ম ১৫০০ টাকা থেকে ২৫০০টাকা ,মৃত্যু বরন করলে পরিবার পাবে সাড়ে আট লাখ টাকা ভাতা।এর পাশাপাশি সরকার প্রদত্ত ৪০০ টাকা স্বাস্থ্য ও দূর্ঘটনা বীমা ।১০ নাম্বার থেকে ১৬ নাম্বার গ্রেডে চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে যাতায়াত ভাতা মাসে ৩৬০ টাকা।৩ নং গ্রেডের উপরের কর্মকর্তাদের জন্য গাড়ি সুবিধার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪র্থ গ্রেডের কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার বিষয়টি বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।মাসে টিফিন ভাতা ৩০০ টাকা। এছাড়া রয়েছে শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা।সকল শ্রেণীর সরকারি চাকরিজীবীকে বর্তমান প্রচলিত প্রতি তিন বছরের স্থলে ২ বছর অন্তর ১৫ দিনের গড় বেতনে অর্জিত ছুটিসহ ১ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা হিসাবে সুপারিশ করা হয়েছে।৪র্থ শ্রেণীর চাকরিজীবীদের জন্য ধোলাই ভাতা মাসে ১৫০ টাকার সুপারিশ করা হয়েছে।কার্যভার ভাতা সর্বোচ্চ সীমা মাসে ২ হাজার ৫০ টাকা উন্নীত করা হয়েছে।রয়েছে গৃহকর্মী ভাতা,পোশাক পরিচ্ছদ সুবিধা,২০% হারে পাহাড়ি ও দুর্গম ভাতা। হাওড়-বাওড়, দুর্গম দ্বীপ অঞ্চলে উপকূলীয় ভাতা।
উচ্চ পদস্থদের জন্য রয়েছে আপ্যায়ন ভাতা।মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মূখ্য সচিব ৩ হাজার টাকা, সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তা ২ হাজার ৫০০ টাকা, অতিরিক্ত সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তা ২ হাজার টাকা, যুগ্ম সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ১ হাজার ৫০০ টাকা সুপারিশ করা হয়েছে।রয়েছে ভ্রমণ ভাতা।বদলিজনিত ভ্রমণ ভাতা, এককালীন সড়ক পথে ১০০ কি.মি. পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা, ১০১ থেকে ২০০ কি.মি. পর্যন্ত ১৫ হাজার ৫০০ টাকা, ২০১ থেকে এর বেশি কি.মি. হলে ২০ হাজার টাকা ভ্রমণ ভাতা। আরো রয়েছে পেনশনযোগ্য চাকরিকাল। প্রথম গ্রেড থেকে ১৬ গ্রেড পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে পেনশনযোগ্য চাকুরিকাল ৫ বছর থেকে শুরু করে ২৫ বছর ।এ সময় পেনশনের হার গ্রেড অনুযায়ী ২০ শতাংশ থেকে গ্রেড অনুযায়ী ৯০ শতাংশ ।রয়েছে আবাসন ও গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রজেক্ট।সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ঋণের পরিমাণ গ্রেড অনুযায়ী ১২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা গৃহ ঋণ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।এক্ষেত্রে সুদের হার হবে ব্যাংক রেটে ৫ শতাংশ। এর পাশাপাশি জেলা পর্যায়ে খাস জমি চিহ্নিত করে সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা।৮ম থেকে ১ম গ্রেড স্কেলের কর্মকর্তাদের ২০ জনের জন্য ১০ কাঠা ও অন্যান্য চাকরিজীবী প্রতি ২০ জনের জন্য ৮ কাঠা প্লট দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া আরো অনেক সুবিধাই রয়েছে।উপরিউক্ত সুযোগ সুবিধা তারা পান আমি মনে প্রানে তা চাই ও বটে।একজন মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ভালভাবে জীবন ধারনের জন্য উপরিউক্ত সুবিধা সমূহ অপরিহার্য। কিন্তু সমস্যা হল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে। সরকারি চাকুরিজীবিদের বোনাস মুল বেতনের ১৬ আনা হলে ও বেসরকারি শিক্ষকদের বেলায় তা ৪ আনা ও কর্মচারিদের বেলায় তা ৮ আনা পরিমাণ৷
একই পাড়ার কিংবা একই বাড়ির কিংবা একই পরিবারের ২ জন সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকের পোশাক, তাদের ছেলে সন্তান,পরিবার পরিজনের উৎসবের দৃশ্য কি ভিন্ন? সরকারি- বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য উৎসবের সংজ্ঞা আলাদা কিনা তাও আমার বোধগম্য নয়।অথচ তারা ২জন শিক্ষকই দেশের জন্য,শিক্ষার জন্য,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য,জাতি গড়ার কারিগর হিসেবে সমান হারেই অবদান রাখছেন।বলুন তো উৎসব ভাতা ভিন্ন
হলে এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষকের ছেলে মেয়েরা ঈদ করবে কাদের সাথে? যেখানে সরকারি অফিসের একজন পিয়ন, বেসরকারি শিক্ষকের চেয়ে অন্তত চারগুণ বেশি বোনাস পায়, সে ক্ষেত্রে জাতি গড়ার কারিগর স্যার সম্প্রদায়ের মানটা
কোথায় থাকে ?
বাজেট থেকে বলছি,বর্তমানে এমপিভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও উৎসব ভাতা বাবদ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বছরে ব্যায় হয় প্রায় ৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা । এটাকে ১৫ হাজার কোটি টাকায় নিতে পারলে জাতীয়করণ অনায়াসে সম্ভব।অর্থাৎ স্মার্ট শিক্ষক গঠনে জাতীয়করনের জন্য বাড়তি প্রয়োজন প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা ।
অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যসূত্রে জানা যায়, ত্রিশ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের উৎসব ভাতা শতভাগকরনে প্রয়োজন প্রায় এক হাজার একশত কোটি টাকা। বর্তমানে এ খাতে সরকারি বরাদ্দ প্রায় সাড়ে তিনশত কোটি টাকার কাছাকাছি।
বাড়তি প্রয়োজন প্রায় সাড়ে সাত শত কোটি টাকা।এই টাকা থোক বরাদ্দ দিলেই ৫ লক্ষ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারির মুখে তৃপ্তির হাসি, মানে সমস্যা সমাধান।জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার তো গরীব এদেশে ত্রিশ হাজার কোটি টাকার ও বেশি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মান করেছেন ,স্মার্ট সোনার বাংলা বিনির্মানে ও রেকর্ড পরিমান উন্নয়ন মূলক কাজ সম্পাদনে হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করেছেন,মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষি খাত, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ ও কর্মসংস্থানে বর্তমানে বাজেটে হাজার কোটি টাকা ভুর্তকি দিয়েছেন,বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ প্রায় দশটি ভাতা খাতে কয়েক হাজার কোটি টাকা ভুর্তকি দিয়েছেন,বাজেট অনুযায়ী মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর প্রতি দিনের অফিস খরচ প্রায় ১০ কোটি টাকার কাছাকাছি করেছেন, প্রয়োজন বিবেচনায় শেখ হাসিনার উদ্যেগ ,ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ খাতে হাজার কোটি টাকা ভুর্তকি দিয়েছেন, সেখানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদেরকে প্রয়োজন বিবেচনায় শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদানে উল্লেখিত টাকা ভুর্তকি প্রদান কি অসম্ভব কিছু? এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান করলে কি দেশ দেউলিয়া হয়ে যাবে?যদি কেউ এটিকে নিছক অপচয় এবং অসম্ভব মনে করেন তাদের জন্য বলি বাংলাদেশ ব্যাংক কেলেংকারি,শেয়ার বাজার কেলেংকারী, ডেসটিনি কেলেংকারি, হলমার্ক কেলেংকারি,রেল কেলেংকারি,ই-ভ্যালি কেলংকারি,বিমানের বাৎসরিক বিশ : হাজার কোটি টাকা লোকসান ইত্যাদি সব কেলেংকারিতে কি দেশের হাজার কোটি টাকা অপচয় হয়নি? দেশের সব ঠিক ঠাক মত চলছে।কোথাও আটকাচ্ছে না দেশ। শুধু এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব ভাতার সিদ্ধান্ত নিতে গেলেই সরকার,মাউশি,শিক্ষা- মন্ত্রনালয়ের যত রুপ কথার ন্যায় অজুহাতের ছড়াছড়ি।তাই, ঈদ আসলেই শিক্ষকদের মুখে মলিনতার ভাব নিরসনে ,প্রাণে ভয়,বিবেকে অপমান,গভীর রাতে চোখে ক্রন্দন,অসহায়ত্বের হাতছানির অবসানে স্মার্ট দেশ গঠনের জন্য এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা শতভাগকরনের দাবী কি খুব বেশি চাওয়া?
শিক্ষাবান্ধব শেখ হাসিনা সরকারকে বলছি, পৃথিবীর বুকে এদেশের মানচিত্র উচ্চাসীন হয়েছে, উচ্চাসীন করেছেন।বিশ্ব নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রথম সারিতে অংশ নিয়েছে,কত অর্জনই তো হয়েছে।কত অর্জনই তো করেছেন।শুধু এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের গত বিশ বছর ধরে উৎসব ভাতা ঐ ২৫ শতাংশেই রেখে দিয়ে কি ব্যর্থতার একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাইছেন?আমরা শিক্ষকরা লোক দেখানো রাজনীতিবিদদের মত যেমনি কাঁদতে পারি না,তেমনি লোক লজ্জার ভয়ে হাসতে ও পারি না বিবেকের ঘৃনায়।আমরা আমাদের প্রিয়জনদের যেমনি উৎসবে হাসাতে পারিনা ,প্রিয়জনদের নিয়ে উৎসবে মেতে উঠতে ও পারি না।তাই উৎসব ভাতা শতভাগ করে, শিক্ষার এই কলংক মুছে ফেলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কে সন্মানের সাথে বাঁচতে দিন।
লেখক ও কলামিস্ট
লেখকঃ বিভাগীয় প্রধান (অনার্স ও মাস্টার্স শাখা) আয়েশা( রা:) মহিলা কামিল(অনার্স,এম.এ) মাদ্রাসা,সদর, লক্ষীপুর এবং মেম্বার কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটি, সাধারন সম্পাদক, লক্ষীপুর জেলা শাখা এবং সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি,বিএমজিটিএ।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৬/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়