জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ নয়

মোহাম্মদ আলী শেখ।।
 সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সংবাদ আমার চোখে পড়েছে ।জ্বালানি তেলের সংকট মোকাবেলার জন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি তিনদিন করার প্রস্তাব দেয়।এতে জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
 গত ১২ ৮ ২০২২ ইং তারিখে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির ১৭ তম জাতীয় সম্মেলনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন করার জন্য চিন্তা ভাবনা চলছে বলে জানান।
এ ব্যাপারে হয়তো অনেকেই তাঁর পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিবেন। প্রথম কথা হল আমাদের দেশে শিক্ষার মান অনেক নিচে। পৃথিবীর ১৯৬টি দেশের মধ্যে রাঙ্কিং করলে দেখা যায় আমাদের দেশের অবস্থান ১২৮ কিংবা ১৩৮ তম। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর সেরা ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নেই।
করোনা কালিন সময়ে করোনা মোকাবেলার জন্য সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল । তাতে যে ক্ষতি হয়েছে তা আদৌ রিকভারি করা যায়নি । মাঝে সিলেটে বন্যার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল । অনেক শিক্ষার্থীর বই খাতা পানিতে ভেসে গেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সময়মতো নেওয়া সম্ভব হয়নি। এতেও অনেক ক্ষতি হয়েছে।
এখন যদি আবার জ্বালানির সংকট মোকাবেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি বাড়িয়ে দুইদিন করা হয় তাহলে শিক্ষার আরো ক্ষতি হবে। আমরা অনেক কিছু পিছিয়ে যাব। করোনা কালীন সময়ে জাতিসংঘ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল “যেকোনো সংকটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবার পরে বন্ধ হবে এবং সবার আগে খুলবে।”
২০২৩ সালের যারা এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাদের পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে এপ্রিল ও জুন মাসে। উচ্চ মাধ্যমিকের ব্যাপক সিলেবাস, সংক্ষিপ্ত সময়ে কোর্স সম্পন্ন করা কঠিন ।তারপরও যদি সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা কোর্স শেষ করতে পারবে না। তারা হয়তো পরীক্ষা দিবে, পাশও করবে কিন্তু দুর্বলতা থেকে যাবে।
তাই জ্বালানি সংকটের অজুহাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন না করে তার বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে। এখন গরমের প্রভাব কিছুটা কমতে শুরু করেছে । সকল এসি বন্ধ রাখা যেতে পারে। শহরের বড় বড় বিল্ডিং যা গ্লাসের চাদর দ্বারা আবৃত,তার মালিকদেরকে জানালা তৈরীর নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে। সরকার যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন করে তাহলে জ্বালানের কিছুটা সাশ্রয় হয়তো হবে, সেক্ষেত্রে প্রাইভেট, কোচিং সেন্টার এর গুরুত্ব বেড়ে যাবে। অভিভাবকদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে।

 

 তাই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ করতে চাই  জ্বালানি সংকট মোকাবেলায়  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন করার চিন্তা পুনঃ বিবেচনা করবেন।
লেখক-
মোহাম্মদ আলী শেখ
সহকারী অধ্যাপক
কাদিরদী কলেজ
ফরিদপুর।