শীত- কুয়াশায় মাঠে ঘুমিয়েও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ
নিজস্ব প্রতিবেদক ||
কুয়াশায় মাঠে ঘুমিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
করোনা মহামারির কারণে ঢাকাসহ সারা দেশে হোস্টেল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নিচ্ছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এতে অনেক শিক্ষার্থী কষ্ট করে বাড়ি ভাড়া নিয়ে পরীক্ষা দিলেও কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা কাঁথা-বালিশ নিয়ে মাঠে ঘুমিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, পরীক্ষা চলছে অথচ হোস্টেল বন্ধ রাখা হয়েছে। এটি এক অদ্ভুদ নিয়মে চলছে। যতদিন পর্যন্ত হোস্টেল খুলে দেওয়া না হবে, ততদিন পর্যন্ত তারা মাঠেই থাকবেন।
কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা ৬০ থেকে ৭০ জন শিক্ষার্থী তোশক, কাঁথা, বালিশ ও কম্বল নিয়ে হোস্টেলের সামনে মাঠেই অনশন ও রাত যাপন করছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত রোববার থেকে অনেক শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ সেমিস্টারের চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অনেক শিক্ষার্থী ইতিমধ্যেই পরীক্ষায় অংশ নিতে চলে এসেছেন। কিন্তু করোনার কারণে হোস্টেল না খোলায় বিপাকে পড়েছেন এসব শিক্ষার্থী। পরীক্ষার সময়টা থাকার জন্য আশপাশের মেস ও বাসা ভাড়ারও ব্যবস্থা করতে পারছেন না তারা। নেই খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, হোস্টেল খোলার দাবিতে শীতের রাতে কুয়াশার মধ্যে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খোলা মাঠে রাত যাপন ও অনশনের সিদ্ধান্ত নেন তারা। হোস্টেল খুলে না দেওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
ঢাকা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা ছাত্র মামুন রানা, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে আসা জেনিথ খান, ওই জেলার কলমাকান্দা থেকে আসা রায়হান ইসলাম জানান, তাদের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়ুয়া ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী কিশোরগঞ্জ জেলার বাইরে থেকে এসেছেন এবং তাদের বেশিরভাগই হোস্টেলে থাকেন। হোস্টেল না খুলে পরিক্ষার ঘোষণায় তারা বিপাকে পড়েছেন। দুই দিন ধরে কতৃপক্ষের সাথে কথা বললেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের হোস্টেল সুপার কামরুল হাসান জানান, কারিগরি বোর্ড প্রায় দেড় মাস আগে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তারা বারবার হোস্টেল খুলে দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোহা. আবদুর রকিব জানান, যেহেতু পরীক্ষা, সেহেতু দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা অধিদপ্তরের সম্মতিক্রমে হোস্টেল খুলে দেওয়া উচিত। তারাও হোস্টেল খুলে দেওয়ার জন্য বারবার আবেদন করছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ছাড়া তাদের কিছু করার থাকে না। খোলা মাঠে শিক্ষার্থীদের রাত্রিযাপনের বিষয়টি নিয়ে তিনি চিন্তিত। দ্রুত হোস্টেল খোলা হলে সকলের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।