রুয়েট: প্রভাব খাটিয়ে চাকরি, জালিয়াতি করে পদোন্নতি
রাজশাহীঃ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনী ফারুক। সম্প্রতি এক রাজাকারের শ্যালক ও বিএনপি নেতার ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
জানা যায়, রুয়েটে ২০১২ সালের সার্কুলারে পিএস টু ভিসি পদে নিয়োগ পান ফারুক। তবে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ফলাফল বাতিল করে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের নিয়ে তৎকালীন উপাচার্যের দপ্তর ঘেরাও করেন তিনি।
পরে ফারুককে চাকরি দিতে বাধ্য হন তৎকালীন উপাচার্য ড. সিরাজুল করিম চৌধুরী।
অভিযোগ আছে, রুয়েটের প্রকৌশল দপ্তরে সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও ফারুকের যোগসাজশে সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মোতাহার হোসেনকে বাদ দেওয়া হয়। পরে সেই পদে অনৈতিকভাবে রুয়েট ছাত্রশিবিরের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও শিবির নেতা মো. আহসান হাবীবকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এরপর মাত্র দেড় বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা নিয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার পদ বাগিয়ে নেন ফারুক।
অথচ ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক ছিল।
পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা ছাড়াই সহকারী রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের বিষয়ে রুয়েটের সাবেক ভিসি রফিকুল ইসলাম বেগ বলেন, ‘এত আগের খবর আমি বলতে পারব না। এটা একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। তারা যাচাই-বাছাই করে সেটির জন্য রেজিস্ট্রার দপ্তরে সুপারিশ করে।
আমি এগুলো দেখি না। আমার আমলের রেজিস্ট্রারের সঙ্গেই যোগাযোগ করেন। তিনিই ভালো বলতে পারবেন।’
এ বিষয়ে ওই সময়ের রেজিস্ট্রার ড. সেলিম হোসেন বলেন, ‘এটি কিভাবে হয়েছে তা এখন বলা সম্ভব নয়।’
এ বিষয়ে বর্তমান রেজিস্ট্রার আরিফ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘তাঁর (ফারুকের) সহকারী রেজিস্ট্রার পদের অভিজ্ঞতা রুয়েটের নিয়োগসংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী হয়েছে।
তবে সেই নীতিমালা রুয়েট পরিচালনা অধ্যাদেশে নেই। আমরা বিষয়গুলো তাঁর কাছে জানতে চাইব।’ তিনি বলেন, ‘তাঁর ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে আপগ্রেডেশনের ক্ষেত্রে শিথিলতা করা হয়েছে।’
প্রতিটি পদেই তাঁর জন্য শিথিলতা কেন? জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহ মো. আলবেরুনী ওরফে ফারুক বলেন, ‘আমি প্রথম শ্রেণির চাকরি করছি ২০১২ সাল থেকে। আর ২০২২ সালে যদি আমার প্রমোশন হয় তাহলে গ্যাপ থাকল কোথায়? একজন উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছেন। সহকারী রেজিস্ট্রার আর ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েছি পৃথক দুই উপাচার্যের সময়। তাই এসব বিষয়ে তাঁদের প্রশ্ন করেন।’
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৫/০৫/২০২৪