লজ্জায় প্রাথমিক শিক্ষকের ভাতা প্রত্যাহার!
নিউজ ডেস্ক।।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের জন্য সরকারের বরাদ্দ করা দৈনিক টিফিন ভাতার পরিমাণ ‘অপর্যাপ্ত ও অসম্মানজনক’ মনে করে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নিজের এই ভাতা প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার আবুল কাশেম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক।
চলতি বছরের মার্চ মাসে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেন সহকারী শিক্ষক মনিবুল হক বসুনীয়া।
ওইসময় রাজারহাট উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. সোলায়মান মিঞা ওই শিক্ষকের টিফিন ভাতা প্রত্যাহারের আবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।
এদিকে এই আবেদনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পাওয়া যাচ্ছে এই আবেদনটি।
আবেদনে লেখা রয়েছে, ‘জনাব, যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শক পূর্বক নিবেদন এই যে, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী আমাকে প্রদেয় মাসিক টিফিন ভাতা ২০০ টাকা, যা গড়ে প্রতিদিনে প্রায় ৬.৬৬ হারে দেয়া হয়, তা আমি ব্যক্তিগত কারণে প্রত্যাহারের আবেদন জানাচ্ছি। অতএব, আমার মাসিক ভাতা থেকে প্রদেয় টিফিন ভাতা প্রত্যাহারের প্রয়োজনীত ব্যবস্থা গ্রহণে আপনার মর্জি হয়।’
জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক মনিবুল হক বসুনীয়া বলেন, ‘আমি মনে করি, একজন শিক্ষক হিসেবে এই বরাদ্দ অসম্মানের। এই টাকা না হলেও আমি চলতে পারবো। তাই অনেকটা অভিমান করেই ভাতা প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছি।’
অন্য শিক্ষকদের প্রতি একই আহ্বান জানাবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মনিবুল হক বসুনীয়া বলেন, ‘আমি আমার ব্যক্তিগত চিন্তা থেকে টিফিন ভাতা প্রত্যাহারের আবেদন করেছি। অন্য শিক্ষকরা করবেন কিনা তা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ, কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের জন্য যে টিফিন ভাতা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা কোনোভাবেই পর্যাপ্ত নয়। ওই টাকা দিয়ে কোনও মানুষের টিফিন হতে পারে না। প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছি। আমরা আশা করছি সরকার আমাদের দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সেগুলো বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেবেন।’