এইমাত্র পাওয়া

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিয়োগবিধি এবং কিছু মতামত

শিক্ষাবার্তা ডেস্ক :

গতকাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিয়োগবিধি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে ফেসবুকে চলছে আলোচনা সমালোচনা। এই বিধি কে কিভাবে দেখছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীর ওয়াল থেকে এরকমই কিছু মন্তব্য সংগ্রহ করে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

পলাশ রব্বানী লিখেছেন, এই সদ্য গেজেটের মর্ম কিছুটা বুঝতে পেরেছি মনে হয়। আমি যা বুঝেছি, তা হল:-

১) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদের ৫০% পদ পূরণ করা হবে সরকারি স্কুলের “সিনিয়র শিক্ষক/শিক্ষিকাদের ” মধ্য থেকে, বয়সের ভিত্তিতে। গেজেটে সিনিয়র শিক্ষক আর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদবি সম-মানের দেখানো হয়েছে।

২) উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিস এবং সরকারি কলেজ ও স্কুলে কর্মরত হিসাব রক্ষক ও কেরানীদের মধ্য থেকে উপজেলা “সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার” পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

৩) কেরানীদের সাথে শিক্ষকের কোন তুলনা এই গেজেটে করা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। তবে–

৪) উপজেলা “সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার” পদে মাধ্যমিক স্কুলের “সহকারী শিক্ষকদের” পদায়নের একটা দাবি ছিল, এই গেজেটের মাধ্যমে সেই দাবিকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।
বিঃদ্রঃ- আমার বুদ্ধিতে আমি যা বুঝেছি তা লিখলাম। যদি ভুল থাকে, ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইল।

◆১ম কথা হলো, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার(উমাশিঅ) বা উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (উসমাশিঅ) গণ কোনদিনও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণকারী ছিল না। এখনও নেই।
◆ অন্যান্য কিছু সেক্টরেও যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে ১৩/১৪ তম গ্রেডের কর্মচারীরা ১০ম/৯ম গ্রেডে উন্নীত হতে পারে, যেমন, ব্যাংক, lged, হিসাব রক্ষণ ইত্যাদি, এমনকি psc তেও।
◆ সদ্য প্রকাশিত গেজেটে সরকারি মাধ্যমিকের ক্ষতির মধ্যে যা হয়েছে, তা হল- সহকারী শিক্ষকগণ যাতে উসমাশিঅ পদে যেতে পারেন, এরকম একটি দাবি ছিল , সেই দাবি আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
●●আমাদের কিছু লাভ হল কিনা?●●
** সামান্য লাভ হয়েছে। তা হল, সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই উমাশিঅ পদে যেতে পারবেন। তবে আপাতত সংখ্যাটি খুব কম। কারন–
** ৪৮৬ টি উমাশিঅ পদের মধ্যে মাত্র ৩০/৩৫ টি পদ বর্তমানে খালি আছে। তাই, ২৪৩ জন নয়, আপাতত মাত্র ৩০/৩৫ জন বা তার কম সংখ্যক সিনিয়র শিক্ষক সেই সুযোগ পাবেন। যদিও সিনিয়র শিক্ষক পদবিধারী একজনও বর্তমানে সরকারি মাধ্যমিকে নেই। সৃষ্ট এ পদে শীঘ্রই পদায়ন ঘটিবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
** সরকারি মাধ্যমিকে যাদের চাকুরীর বয়স ১৮/২০ বছর অতিক্রম করেছে, এই গেজেট তাদের জন্য তেমন আনন্দের নয়, তবে নুতন নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য সুখের।
(ভুল ত্রুটি মার্জনীয়)

ফজলে রাব্বি লিখেছেন :

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস নিয়ে গেজেট হয়েছে, এখানে হিসাবরক্ষকদেরও পদোন্নতির মাধ্যমে এবং বি,এড অর্জনের মাধ্যমে সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে রাখা হয়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, হিসাবরক্ষকরা আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখতে রাখতে পরিদর্শক হিসেবে কিভাবে আবির্ভূত হবেন এবং তাদের দ্বারা কিভাবে মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটবে সেটিও আমার বোধগম্য নয়… একই সাথে আমার জানামতে যারা হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত আছে তাদের কারোরই বি,এড নেই… কাজেই এখন হয়ত অর্থের বিনিময়ে বি,এড অর্জন করতে দেখা যাবে!! মানসম্মত শিক্ষা অর্জন করতে গিয়ে আমরা মানহীনতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিনা তো… বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন!!

আহমদ হোছাইন লিখেছেন

“নিরাপত্তা প্রহরী ” 24 বছর পরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হতে পারবে। হায়, সেলুকাস!! শিক্ষা ও শিক্ষকতার অপমান কারে কয়?

কামরুল হাসান মাসুম লিখেছেন

সিনিয়র শিক্ষকের পদোন্নতির পরবর্তী ধাপ সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার কিংবা সহকারী প্রধান শিক্ষক। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের (যারা সিনিয়র শিক্ষক নয়) পদন্নোতির ধাপ কি একই প্রক্রিয়ায় নাকি অন্য কোন উপায়ে হবে, জানতে চাচ্ছি।

চম্পনান চাকমা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিয়োগবিধি নিয়ে তার ব্যক্তিগত মতামতে লিখেছেন

১.নিয়োগবিধির মাধ্যমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সরাসরি নিয়োগ বন্ধ হয়েছে।এটা একটা ভাল উদ্যোগ।
২.এখন থেকে সরকারি মাধ্যমিকের সিনিয়র শিক্ষকরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে পদায়ন পাবেন।(উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মোট পদের ৫০%)।
৩.সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে ৮০% সরাসরি নিয়োগ হবে।নিয়োগ যোগ্যতা সরকারি মাধ্যমিকের সহকারি শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতার সমান।অর্থ্যাৎ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনার্স সহ মাস্টার্স অথবা গ্রেজুয়েট সহ বিএড।
৪.সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে ২০% পদে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্কুল,কলেজ ও অফিসের ৩য় শ্রেনির কর্মচারীদের পদোন্নতির মাধ্যমে পদায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে।তবে সেক্ষেত্রে ৩য় শ্রেনির কর্মচারীদের অবশ্যই গ্রেজুয়েট সহ বিএড ডিগ্রীধারী হতে হবে।
৫.৩য় শ্রেনির কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ রাখা হয়েছে। এটাও খারাপ নয়।তাদের কর্মস্পৃহা বাড়বে।তবে সরাসরি নিয়োগ ৮০% না করে ৪০% করা দরকার ছিল।বাকী ৪০% সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকদের পদায়নের সুযোগ দিলে আরো ভাল হতো।কারন সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও সহকারি শিক্ষক একই পদমর্যাদার পদ।

৬.বর্তমানে কর্মরত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারেরা অধিকাংশই ৩/৪ বছরের মধ্যে পেনশন যাবেন।সেক্ষেত্রে ঐ শূন্য পদ সমূহে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা পদায়ন পাবেন।

৭.নিয়োগবিধি প্রনয়নের মাধ্যমে মাধ্যমিকে কিছু নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে এটা একটা ভাল উদ্যোগ।আগে শুধু সহকারি প্রধান শিক্ষক বা সহকারি উপজেলা জেলা শিক্ষা অফিসার পদে পদোন্নতির সুযোগ ছিল।এখন থেকে সরকারি মাধ্যমিকের সহকারি শিক্ষকরা পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র শিক্ষক হবেন আর সিনিয়র শিক্ষক থেকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে পদায়ন পাবেন।

হুমায়ুন কবির লিখেছেন, সরকারি মাধ্যমিকের নিষ্কৃয়তার কারনেই কেরানী হয়ে গেল উপজেলা শিক্ষা অফিসার। যাও এবার কেরানীকে স্যার বোলাও

মোহাম্মদ তৈয়ব আলী লিখেছেন, বাসমাশিস নেতারা দেখুক কেরাণি কিভাবে অফিসার হয়।

বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক সহকারি শিক্ষক সমিতির সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান চৌধুরী টুটুল লিখেছেন

প্রথমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সুন্দর নিয়েগবিধি যা দ্রুত প্রকাশ হলে। আমাদের সরকারি স্কুলের ফাইল ওয়ার্কের মতো নয়। আমি এই নিয়োগবিধি নিয়ে অনেকদিন পুর্বেই স্টেটাস দিয়েছিলাম তখন বাসমাশিস এর এক নেতা খুব মাইন্ড করে ছিল কেন আমি সেটা fb এ দিয়েছিলাম.. তথ্য নাকি প্রচার হয়ে যাবে… আমি তাঁকে বুঝানোর পরে বুঝে ছিলেন। আসলে তাঁদের কাছে খসড়া বিধি ছিলনা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কল্যান সমিতির সভাপতির নিকট হতে কপিটি পেয়েছিলাম। তিনি কোন গোপনীয়তার অাশ্রয় নেন নি যা আমাদের বাসমাশিস নেতৃবৃন্দ নিয়ে থাকেন।

# সহকারি শিক্ষক সমিতি সব সময় সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে পদায়নকৃত সহকারি শিক্ষকের সমমান পদ হিসেবে ঘোষনার দাবি করে এসেছিল। একটি স্কুলে শিক্ষাকতা করে তিনি যদি উপজেলায় সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার হন তাহলে সরাসরি নিয়োগ প্রাপ্ত সহকারি উ মা অফিসার হতে অনেক ভাল কাজ করতে পারবেন।

# অফিসে কর্মরত কর্মচারী হতে অফিসার হবার সুযেগ থাকায় ধন্যবাদ। কিন্ত সরকারি স্কুলে কর্মরত থেকে অফিস সহকারিরা যোগ্যতা থাকা স্বত্তেও শিক্ষক কিংবা উচ্চ পদে যাবার সুযোগ নেই। এই ক্ষেত্রে ১০% সুযোগ থাকলে ভালো হতো।

# সিনিযর শিক্ষক হতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হবার বিধান নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে তা সিনিয়রদের মধ্যে না হয়ে সবার ( যারাই সিনিয়র শিক্ষক পদোন্নতি পাবেন)জন্য উন্মুক্ত থাকলে ভালো হতো।

# পাশাপাশি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার/সিনিয়র শিক্ষক (ক্যাডারভুক্ত) এবং সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসা/সহকারি শিক্ষক সমমান পদ ঘোষনা করে তা ৯ম গ্রেডে উন্নীত করা হউক।

ধন্যবাদ মাউশিকে…. সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শাখায় কর্মরতরা যেন বঞ্চিত না হয়…. সরাসরি সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিয়োগ বিধানটি স্থগিত করে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়নের জন্য অনুরোধ করছি……

রাশেদ জামান লিখেছেন

কেরানি এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের শিক্ষা অফিসার বানানোর গেজেট হয়েছে। এমন আজগুবি, অন্যায়, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের নামান্তর, এ সিদ্ধান্ত মানিনা, মানবোনা।

আমি সরকারের এই সিদ্ধান্ত মানিনা। সোজা কথা মানিনা! চাকরি চলে যাক, জেল হোক, ক্রসফায়ারে দিক, এই জিনিস মানবোনা।
এটা কারো আর্থিক, চাকুরি বিষয়ক বা গোষ্ঠীস্বার্থের বিষয় নয়। এটা মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে সংশ্লিষ্ট আমলাদের যা খুশি তাই করার ধৃষ্টতা ও শিক্ষাব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একটি মৌলিক প্রশ্ন।

কেরানি বা ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজের সাথে শিক্ষার দূরতম কোনো সম্পর্ক অাছে? না কোনো কালে ছিলো???

এমন আজব, হাস্যকর, জঘন্য ব্যাবস্থা পৃথিবীর কোথাও আছে? এটা কোনো কথা? সরকারি কলেজ বা অন্য কোনো সেক্টরে এমন আজগুবি সিস্টেম আছে?

অনতিবিলম্বে দল-মত, সিনিয়র-জুনিয়র, বিসিএস-আত্তীকৃত, বেসরকারি-এমপিও নির্বিশেষে মাধ্যমিকের সকল শিক্ষককে একযোগে মাঠে নামতে হবে। দাসত্ব, মেরুদণ্ডহীনতা ও লেজুরবৃত্তির একটা সীমা থাকা উচিত!


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.