এইমাত্র পাওয়া

চাকসু নির্বাচন: শেষদিনের প্রচারণায় ভোটার টানতে মরিয়া প্রার্থীরা

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন আজ। তাই শেষ মুহূর্তে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। ক্যাম্পাস কিংবা শহরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে নিজেদের ইশতেহার পৌঁছে দিতে মরিয়া তারা। এতে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা।

সোমবার ( ১৩ অক্টোবর) সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, জিরো পয়েন্ট, শহীদ মিনার, বিভিন্ন ঝুপড়ি এবং ষোলশহরসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচারণা করতে দেখা যায় প্রার্থীদের। রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবে তারা।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম রনি ও প্যানেলের অন্যান্য সদস্যরা প্রচারণা চালান। এ সময় তাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ এবং কুশলবিনিময় করতে দেখা যায়।

এ সময় সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম রনি সাংবাদিকদের বলেন, আজ নির্বাচনি প্রচারণার শেষ দিন। নির্বাচনের আর মাত্র এক দিন বাকি। শেষ দিনে আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দোয়া নিতে এসেছি। শিক্ষার্থীরা আমাদের ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষা করছি।

একই অনুষদে কিছুক্ষণ পর প্রচারণা চালাতে দেখা যায় ছাত্রদল প্যানেলের জিএস প্রার্থী শাফায়াত হোসেনকে। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে লিফলেট বিতরণ এবং ভোট কামনা করেন।

ছাত্রদল প্যানেলের জিএস প্রার্থী শাফায়াত হোসেন বলেন, নির্বাচনি প্রচারণার শেষ দিনে আমরা বিভিন্ন অনুষদে প্রচারণা চালাচ্ছি। নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের আমেজ খুব ভালোভাবেই দেখা যাচ্ছে। আমরা চাই প্রশাসন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক।

শেষ দিনের প্রচারণায় অংশ নিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সমন্বয়ে গঠিত ‘দ্রোহ পর্ষদ’ প্যানেল। দ্রোহ পর্ষদের ভিপি প্রার্থী রিজু লক্ষ্মী অবরোধ কলা অনুষদের ঝুপড়িতে প্রচারণা চালান।

এ সময় রিজু লক্ষ্মী অবরোধ বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছি। আজ যেহেতু প্রচারণার শেষ দিন তাই বিভিন্ন হলে হলে গিয়েছি। এখন পর্যন্ত নির্বাচনি পরিবেশ আমাদের ভালোই মনে হচ্ছে।

এদিকে প্রচারণায় এক ভিন্ন চিত্র দেখা যায় ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে। স্কেটিং করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় সংসদে সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক (স্বতন্ত্র) প্রার্থী অন্তর মন্ডল। স্কেটিং করেই প্রার্থীদের কাছে ছুটে ভোট চাচ্ছেন তিনি।

প্রচারণা চলাকালে অন্তর মন্ডল বলেন, ‘আমি চাকসু নির্বাচনে সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা পদে নির্বাচন করছি৷ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর অবস্থা খুব নাজুক। আমি সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চাই। আমি একজন নৃত্য শিল্পী, সেই সঙ্গে চলচ্চিত্র সংসদের একজন সদস্য। আমি এই পদে ভালো ভাবে কাজ করতে পারব।’

এছাড়া নির্বাচনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নজর কাড়ছেন সুফি মতাদর্শের অহিংস ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বর ও বুদ্ধিজীবী চত্বরে প্যানেলের প্রার্থীরা প্রচারণা চালান। এতে অংশ নেন অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য মনোনীত পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে ভিপি পদপ্রার্থী মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম এবং এজিএস পদপ্রার্থী শহীদুল ইসলাম শাহেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্যানেলের অন্যান্য সম্পাদকীয় পদের প্রার্থীরা।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য মনোনীত পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে প্রার্থীদের প্রচারণা বেশ সাড়া ফেলেছে। প্রার্থীরাও ভোট চেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে বলে আশাবাদী প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করতে আমরা চাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমরা চাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক। শেষ মুহূর্তে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচারণা চালিয়ে বেশ সাড়া পাচ্ছি। আশা করি একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।

শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন প্যানেলের নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী মুহাম্মদ সাব্বির রহমান।

তিনি বলেন, আমরা সবার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। আশা করি সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচনে জয়যুক্ত করবেন।

এর আগে ৯ অক্টোবর সহিংসতাবিরোধী মূল্যবোধকে ধারণ করে ১৬ দফা ইস্তেহার ঘোষণা করেছে অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত এবং শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশে তৈরির লক্ষ্যে ১৬ দফা ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, আগামী ১৫ অক্টোবর চাকসু ও হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন হবে ওএমআর পদ্ধতিতে। পাঁচটি ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৩/১০/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading