প্রযুক্তি: জীবনের আশীর্বাদ এবং আমাদের সম্ভাবনা

প্রযুক্তি আজকের আধুনিক বিশ্বের একটি অপরিহার্য উপাদান। এটি আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে এমনভাবে মিশে গেছে যে প্রযুক্তি ছাড়া দৈনন্দিন জীবন কল্পনাই করা যায় না।

শিক্ষাক্ষেত্র থেকে শুরু করে চিকিৎসা, কৃষি, শিল্প, যোগাযোগ, বিনোদন সর্বত্র প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এক কথায়, প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর করে তুলেছে।

প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপ্লব। আগে যেখানে একটি চিঠি পৌঁছাতে কয়েকদিন বা সপ্তাহ লেগে যেত, এখন সেখানে মুহূর্তের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদান সম্ভব হয়েছে ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে। Zoom, WhatsApp, Facebook, এবং Email-এর মতো মাধ্যমগুলো বিশ্বকে যেন হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে।

শিক্ষাক্ষেত্রেও প্রযুক্তির ব্যবহার আশীর্বাদস্বরূপ। অনলাইন ক্লাস, ডিজিটাল বই, ভার্চুয়াল লাইব্রেরি, এবং শিক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই বিশ্বমানের জ্ঞান অর্জন করতে পারছে।

করোনাভাইরাস মহামারীর সময় এই প্রযুক্তিই ছিল শিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার মূল মাধ্যম।
চিকিৎসাক্ষেত্রেও প্রযুক্তির উন্নয়ন বিস্ময়কর। উন্নত যন্ত্রপাতি, টেলিমেডিসিন, রোবটিক সার্জারি, এবং ডিজিটাল হেলথ রেকর্ডের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা এখন অধিকতর নির্ভুল এবং দ্রুতগতির। দূরবর্তী অঞ্চলেও এখন উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির মাধ্যমে।

অর্থনীতিতেও প্রযুক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। অনলাইন ব্যাংকিং, ডিজিটাল পেমেন্ট, ই-কমার্স ও ফ্রিল্যান্সিং খাতে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে। অনেকেই এখন ঘরে বসে আয় করতে পারছে প্রযুক্তির কল্যাণে, যা কর্মসংস্থানের নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে।

তবে প্রযুক্তির কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে, যেমন— গোপনীয়তার হুমকি, সাইবার ক্রাইম, প্রযুক্তিনির্ভরতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক ও মানসিক সমস্যার ঝুঁকি। তবে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব সচেতন ব্যবহার এবং যথাযথ নিয়ন্ত্রণ নীতির মাধ্যমে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রযুক্তি মানুষের জীবনে এক আশীর্বাদ। এটি শুধু আমাদের জীবনকে সহজ করে তোলে না, বরং আমাদের সম্ভাবনাকে বিস্তৃত করে দেয় বহুগুণে। সঠিকভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করতে পারে।

এই কারণে আমাদের উচিত প্রযুক্তিকে কেবল ভোগ নয়, এর ইতিবাচক দিকগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ ও মানবিক পৃথিবী গড়ে তোলা।

সংকলক: শরীফ আহমেদ, সহকারী শিক্ষক, আইসিটি, হাটখোলা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, দাউদকান্দি, কুমিল্লা।

শিক্ষাবার্তা /এ/০৭ /০৫/২০২৫

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়