এইমাত্র পাওয়া

প্রাথমিক শিক্ষায় ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কমছে

ঢাকাঃ প্রাথমিক শিক্ষায় বাজেট বাড়ানোর দাবি থাকলেও ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ কমছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, নতুন অর্থবছরে এ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। অথচ চলতি অর্থবছরের মূল এডিপিতে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা।

ফলে আগের তুলনায় বরাদ্দ কমছে ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। এমনকি চলতি বছরের সংশোধিত এডিপিতে থাকা ১২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকার তুলনায়ও বাজেট কমানো হচ্ছে ১ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির এক বৈঠকে উপস্থাপিত তথ্যে দেখা গেছে, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) বাজেটেই কাটা পড়েছে সবচেয়ে বেশি অর্থ—৬ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের জন্য কর্মসূচিতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা, যেখানে চলতি বছর বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৫৬ কোটি টাকা।

এছাড়া চারটি প্রকল্পে একেবারেই বরাদ্দ রাখা হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে চাহিদাভিত্তিক নতুন জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল প্রণয়ন প্রকল্প, রৌমারী পিটিআই স্থাপন এবং বিদ্যালয়বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতাভিত্তিক সাক্ষরতা প্রকল্প।

বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য চাইলে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, বিশ্বব্যাংকের মতে, চলতি বছর দেশে আরও ৩০ লাখ মানুষ অতিদরিদ্র হবে। এর প্রভাব প্রথমেই পড়বে শিক্ষায়। এই অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষায় বরাদ্দ কমানো হলে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে উপবৃত্তির সামঞ্জস্য না করাও শিক্ষার্থীদের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতা সবসময় দুর্বল থেকেছে। ফলে ব্যয় না হওয়ার ঝুঁকি মাথায় রেখেই হয়তো বরাদ্দ কমানো হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত ছিল।

বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির তথ্যে জানা যায়, আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব আয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৪ কোটি এবং উন্নয়ন খাতে প্রস্তাবিত ব্যয় ১১ হাজার ৩৯৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

নতুন এডিপিতে মোট ৯টি প্রকল্পে উন্নয়ন বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে: কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণে ১৫০ কোটি টাকা, চাহিদাভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পে ১ হাজার ৮৫ কোটি, ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ৪৫০ কোটি এবং কক্সবাজার ও ভাসানচরে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পে ৩৩১ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার বাজেট বরাদ্দে কঠোরতা অনুসরণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ও কার্যকর প্রকল্প ছাড়া অন্য কোনো খাতে বরাদ্দ দেওয়া হবে না। এজন্য অনেক প্রকল্পেই শূন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/০৪/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading