প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন অর্জিত হবে যে পথে

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড,আর সেই মেরুদণ্ড গড়ার কারিগর হলেন শিক্ষকরা। ছোট ছোট সোনামণিদের কাদামাটির মতো মস্তিষ্কে বর্ণের জ্ঞান সুনিপুণ ভাবে স্থাপন করার প্রথম কারিগর হলেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। সারাদেশে ৬৫ হাজারের অধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৪ লাখ শিক্ষক শিক্ষাদানের মতো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পাদন করে আসছেন।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে,বিশ্বায়নের এই যুগে এসেও স্নাতক দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশনের উপর প্রশিক্ষণ নিয়েও ১৩তম গ্রেডের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়ে আছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

১১ হাজার টাকা মূল বেতনে সর্বসাকুল্যে ১৭ হাজার ৫৭০ টাকা মাসিক বেতনে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থার মধ্য দিয়ে মানবেতর জীবন যাত্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের। সমগ্র বিশ্বে তো বটেই,সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষকদের বেতন ভাতা বাংলাদেশ সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা বৃদ্ধি অর্থাৎ তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী থেকে অন্তত দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছেন।

কিন্তু উর্ধতন কর্তৃপক্ষের থেকে আশ্বাস ছাড়া আর কিছু মেলেনি। দেশের বিখ্যাত পথিতযশা শিক্ষাবিদ থেকে শুরু সুশীল সমাজ এবং অনেক রাজনীতিবিধরাও আজ উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে,এদেশে শিক্ষকদের সামাজিক অর্থনৈতিক মর্যাদা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

কিন্তু কোনো এক অজানা অদৃশ্য কারনে দেশের মূল চালিকা শক্তি শিক্ষা এবং শিক্ষক নিয়ে রাষ্ট্র বড্ড উদাসীন। রাষ্ট্রকে আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে,শিক্ষা যদি জাতির মেরুদণ্ড হয়,তাহলে সর্বাগ্রে শিক্ষার মানোন্নয়নে রাষ্ট্রকে কাজ করতে হবে। শিক্ষার প্রথম স্তর প্রাথমিক শিক্ষা এবং প্রাথমিক শিক্ষকদের রাষ্ট্রীয় সম্মান এবং সম্মানি বাড়াতে হবে।

শিক্ষকদের জীবন মানোন্নয়ন ব্যাতিরেকে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। অতএব প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন কোন পথে হবে সেটা রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদেরই খোঁজে বের করতে হবে।

মো. জামিল বাসার
সহকারী শিক্ষক
বওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
ধনবাড়ী,টাংগাইল।

শিক্ষাবার্তা /এ/০৩/০৪/২০২৫

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়