এইমাত্র পাওয়া

জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে পদত্যাগ করুন:অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া

।। অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া।।

কোটা সংস্কার ছিল একটি অরাজনৈতিক ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থের আন্দোলন। সরকার এটিকে প্রথম থেকেই রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে চেয়েছিল। সরকারের চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী ভিন্ন মতের যে কোন আন্দোলন-সংগ্রামকে সরকারবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, রাজাকারের সন্তানসহ নানা ট্যাগ দিয়ে নস্যাৎ করার চেষ্টা করে। তাই এই শাসরুদ্ধ ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বিতর্কিত ও উত্তেজনামূলক বক্তব্য দেয়া এবং পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যায়ভাবে দমন-পীড়ন ও হামলা-মামলা চালিয়ে একটা রক্তাক্ত পরিস্থিতি তৈরি করে। যা দেশবাসী প্রত্যাশা করেনি।

 অবশেষে সরকার শিক্ষার্থীদের দাবী মানতে বাধ্য হয় এবং প্রজ্ঞাপনও জারি করে। কিন্তু এই প্রজ্ঞাপন দিতে যত রক্ত ঝড়িয়েছে, যত লাশ পড়েছে তার দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।

সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনজীবনের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সেই ব্যর্থতা ঢাকতে মামলা-হয়রানি ও গণগ্রেফতার বাণিজ্য করছে। আমি এর তীব্র নিন্দ ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নিরপরাধ নাগরিকদের মুক্তির দাবি জানাই।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে নিয়ে সরকার দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করেছে। একদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নিরীহ ছাত্র-ছাত্রী এবং কোটা সংস্কারের নেতাদেরকে নির্যাতন করা হবে না। অপরদিকে প্রতিনিয়ত সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে গ্রেফতার অব্যাহত রাখা হয়েছে। সাধারণ মানুষ, প্রতিবন্ধী শিশু এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার এমনকি চাকরিজীবীরা অমানবিক কর্মকাণ্ড থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।

সারাদেশে ১০ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে সাবেক এমপি, মন্ত্রীসহ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ অসুস্থ হওয়া সত্বেও তাদের সন্ত্রাসীদের মতো ৫ -৭ দিন করে রিমান্ডে নির্যাতন করা হচ্ছে। রুহুল কবির রিজভি, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাইফুল আলম নীরব, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু সহ অসংখ্য নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। তাদের নির্মমভাবে চোখ ও হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায়ের নিরন্তর চেষ্টা চলছে। তারা আদালতকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন মানবতাবিরোধী অপরাধ। নির্যাতনে অনাকাঙ্খিত কিছু হয়ে গেলে এর দায় সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেই নিতে হবে।

দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, অভিনেতাসহ প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে নানা কর্মসূচিতে শামিল হচ্ছেন সর্বস্তরের জনসাধারণ।

দেশকে লুটে খাওয়া মানুষগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে মুক্ত বাতাসে। আর দেশ গড়ার কান্ডারী  শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দিয়ে পূর্ণ  করা হচ্ছে কারাগারগুলো। দফায় দফায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। করা হচ্ছে পাশবিক নির্যাতন।বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও।  সারা দেশটা আজ কারাগারে পরিনত হয়েছে।

আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আগে পদত্যাগ করুন তারপর শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সকল রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক সহ সকল পর্যায়ের জনগনকে সম্পৃক্ত করে আলোচনার মাধ্যমে এই পরিস্থিতির সমাধান করুন।

তাছাড়া যতই ছলচাতুরি করুন না কেন গণদাবির কাছে পদত্যাগ করতেই হবে। মানুষ যখন এই তীব্র প্রতিবাদ শুরু করেছে এই প্রতিবাদের ধারা অব্যাহত থাকবে।

লেখা-চেয়ারম্যান, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এ/০২/০৮/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading