শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে ছাত্ররাজনীতি আবার চালু হতে পারে: বুয়েট উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) আবার ছাত্ররাজনীতি চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) রাজনীতি করা বন্ধ হয়েছিল। তারা চাইলে আবার শুরু হবে। তবে সেই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের থেকেই নিতে হবে।

রবিবার (৩১ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে উপাচার্যের কক্ষে এই মন্তব্য করেন তিনি।

উপাচার্য বলেন, ছাত্র রাজনীতি ছাত্রদের গড়ে ওঠার জন্যই দরকার। বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে আবার ছাত্ররাজনীতি চালু হতে পারে।

ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে গত শুক্রবার থেকে বুয়েট শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বীসহ ছয়জনের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এরই মধ্যে ইমতিয়াজের হলের সিট বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৯ সালে আবরার হত্যার পর ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। সে নিষেধাজ্ঞা না মেনে গত বুধবার রাতে কিছু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালায়। এর প্রতিবাদে তাঁরা বিক্ষোভ করছে। দাবি আদায়ে রোববার পর্যন্ত পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।

এ প্রসঙ্গে সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, তদন্ত কমিটি কাজ করছে, রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেব। আর পরীক্ষা ওপেন আছে, কেউ চাইলে দিতে পারে।

এদিকে রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করছে ছাত্রলীগ। সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা আজ এখানে মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি। বুয়েটের এই সিদ্ধান্ত মৌলিক অধিকার পরিপন্থী, সংবিধান পরিপন্থী, শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্ত।’

এ সময় তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা, বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেনের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত তুলে নেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘রাব্বির অপরাধ কী? সে ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিনে, যিনি বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছেন, তার জন্মদিনে ইফতার বিতরণ করেছে। ২৬ মার্চ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছে। এই দেশের পতাকা, এই দেশের মানচিত্র এই দেশের ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য যে সংগঠনের কর্মীরা রক্ত দিয়েছে, সেই সংগঠনের কর্মী হওয়ার কারণে কাউকে যদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় সেই এলাকাকেই নিষিদ্ধ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার নাটক বাংলাদেশ থেকে বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের যেকোন জায়গায় নাগরিক হিসেবে যাওয়ার অধিকার আমার হয়েছে। তাদের কাছে পারমিশন নিতে হবে? যে অধিকার আমাকে সংবিধান দিয়েছে তাকে আপনারা ঠুনকো বানিয়ে দেবেন এবং সেটা আমরা মেনে নেব, এই আশা যারা করছে তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে। বুয়েট কি পাকিস্তান যে ভিসা-পাসপোর্ট দিয়ে পারমিশন নিয়ে ঢুকতে হবে?’

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের নামে ‘অন্ধকারের রাজনীতি’র চাষাবাদ হচ্ছে বলেও জানান সাদ্দাম হোসেন। এসময় তিনি বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চালুর পাশাপাশি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতেও কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/৩১/০৩/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading