একই ভবনে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) কলেজ, বাগবাটি মডেল গার্লস অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট ও মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ। এর মধ্যে মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ বাদে বাকি দুটি প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত হয়েছে।
ফের কবে এমপিওভুক্তি, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে বাগবাটি মডেল গার্লস অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের অবকাঠামো ও স্থাপনা রয়েছে। একই ভবন ও স্থাপনা ব্যবহার করেই চালানো হচ্ছে বাগবাটি টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) কলেজটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠান তিনটি হলেও একটি অফিসে চলছে সবগুলোর কার্যক্রম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০২ সালে সদর উপজেলার চর নান্দিনা গ্রামে বাগবাটি টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা থেকে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-কর্মচারী সুন্দরভাবে প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে আসছিল।
ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এশারত আলী কৌশলে ওই কলেজের কাগজপত্র নিয়ে ৮ কিলোমিটার দূরে পিপুলবাড়িয়া বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে কলেজ প্রতিষ্ঠার নামে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেন। পরবর্তীতে সেটি বাগবাটি মডেল গার্লস অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের একটি ভবনে স্থানান্তর করে নামমাত্র শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসেন।
চর নান্দিনা গ্রামে প্রতিষ্ঠানের ঘরসহ সব আসবাবপত্র থাকলেও এশারত আলী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অন্য প্রতিষ্ঠানের ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর ফলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব জায়গায় ফিরিয়ে নিতে ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি আবেদন করেন চর নান্দিনা গ্রামের বাসিন্দারা।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সহকারী কমিশনার টিনা পাল তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তে ওই প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব জায়গায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য কারিগরি শিক্ষা বিভাগকে সুপারিশ করা হয়।
এরপরও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটি নামসর্বস্ব অবস্থায় অন্য প্রতিষ্ঠানের ভবনে কার্যক্রম চালায়। এরই মধ্যে সিরাজগঞ্জের ৩৪টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাগবাটি টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজটিকেও এমপিওভুক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এসব নিয়ে কোনো শিক্ষকই কথা বলতে রাজি না হলেও বাগবাটি মডেল গার্লস অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সব তথ্য কলেজের প্রতিষ্ঠাতা এশারত আলীর কাছে রয়েছে।
তবে বাগবাটি টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মো. এশারত আলী বিস্তারিত জানতে না চাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রতিবেদককে চায়ের দাওয়াত দেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফি উল্লাহ বলেন, এমপিওভুক্তির আবেদন সরাসরি করা হয়েছে। আবেদনের আগে বা পর জেলা থেকে খোঁজখবর নেয়ার সুযোগ ছিল না। তবে অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
স্থানীয়রা জানায়, সদর উপজেলায় এমপিওভুক্ত হওয়ার যোগ্য বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থাকলেও সেগুলো না করে নিজস্ব জায়গা ও অবকাঠামো না থাকলেও নামসর্বস্ব ‘বাগবাটি টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ’ এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। ভুয়া প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিল করে এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছে স্থানীয়রা।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.