স্কুল ছেড়ে খাস খাল নিয়ে ব্যস্ত প্রাথমিক শিক্ষক
সাতক্ষীরাঃ জেলার আশাশুনিতে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলে পাঠদান রেখে খাল নিয়ে ব্যস্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই সহকারী শিক্ষকের নাম শরীফুজ্জামান শরিফ। তিনি কুল্যা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। বর্তমানে তিনি স্কুল ছেড়ে আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারি খাল ইজারাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। খননকৃত খালের কাজে বাধা দেয়ায় তার ইজারা বাতিল করতে আশাশুনি এসিল্যান্ডকে একটি পত্র দিয়েছেন সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরিফুজ্জামান শরিফ আশাশুনি এসিল্যান্ড অফিসের মাধ্যমে খাস কালেকশন ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি চলমান উন্নয়নের অংশ হিসেবে খাল খনন কাজে বাধাগ্রস্ত করছেন। যেখানে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ সনের ৫৭নং আইনে সপ্তম অধ্যায়ের ১৭ ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি ব্যতিত অন্য কোনো ব্যবসায়ীক কাজ-কর্ম করতে পারবে না। কিন্তু সহকারী শিক্ষক শরিফুজ্জামান শরীফ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হওয়ার সুবাদে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের পক্ষে তার নিজ নামে পুটিমারি ও আমতখালী সরকারি খাল খাস ইজারা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অপরদিকে তার বিরুদ্ধে স্কুলে পাঠদান না করার একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে একদল সাংবাদিক বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। এ সময় শিক্ষক শরীফুজ্জামান শরিফ স্কুলে উপস্থিত না থাকায় তার ব্যবহৃত ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ছুটি নিয়ে খুলনায় এসেছি।
খাল ইজারার বিষয় তিনি বলেন, আমরা খাল ইজারা নিয়ে খাস কালেকশন করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডে সঙ্গে আমার সব মিটে গেছে।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম বলেন, সহকারী শিক্ষক শরীফুজ্জামান শরীফ বৃহস্পতিবার কোনো ছুটি নেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রকিবুল ইসলাম, জানান বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে সত্য হলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে কীভাবে সরকারি খাস খাল নিজ নামে ইজারা গ্রহণ করলেন এমনই প্রশ্ন জনমনে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী গোকুল চন্দ্র পাল স্বাক্ষরিত পত্রে জানা গেছে, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এবং খালের জায়গা ইজারা দেয়ায় একদিকে যেমন খাল খনন কাজে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে জনমনে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হতে দেখা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় খাল খনন কাজে বাধা দেয়ায় শরীফুজ্জামান শরীফের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, একই সঙ্গে স্কুলে পাঠদান না করায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৯/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়