শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তৈরি হচ্ছে রোডম্যাপ
নিউজ ডেস্ক।।
করোনায় গতি হারিয়েছে শিক্ষা। ক্লাসরুমের পাঠ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরাও পিছিয়ে পড়েছে। গত দুই বছরে শিক্ষায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুনরুদ্ধার করতে নানা পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন সবাই। সরকারের পক্ষ থেকেও তৈরি করা হয়েছে নির্দিষ্ট একটি রোডম্যাপ।
আর সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী শুরু হয়েছে পাঠ পরিকল্পনা ও শ্রেণিকক্ষের পাঠদান। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (পলিসি ও অপারেশন) পরিচালক জানিয়েছেন বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ ঘাটতি চিহ্নিত করে বিশেষ শ্রেণিকার্যক্রমও পরিচালনা করা হবে। গতকাল বুধবার থেকে নির্দিষ্ট গতিপথে ফিরেছে দেশের সার্বিক শিক্ষাকার্যক্রম। দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলেছে। শুরু হয়েছে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান। একই সাথে মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ চুকিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম সোপান একাদশের ক্লাসও শুরু হয়েছে গতকাল থেকেই।
অন্য দিকে এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিকের ক্লাসও শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রমও শিগগিরই শুরু হচ্ছে। আগামী ২০ মার্চ থেকে প্রাক-প্রাথমিকের ক্লাসও শুরু করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি মাস থেকেই প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব শ্রেণীর ক্লাসরুমের পাঠকার্যক্রম পুরোদমে শুরু হচ্ছে। একই সাথে গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেছেন, গত দুই বছর শিক্ষার্থীরা একটা ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছে।
এখন নতুন করে শিক্ষার সব কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশা করি, তাদের আগামী দিনগুলো সুন্দর হবে। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে আগের অবস্থানে ফিরতে পারবে। শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, সম্মিলিতভাবে শিক্ষার্থীদের আগের ঘাটতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। হয়তো এক শিক্ষাবর্ষে সব ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়। আশা করছি, এই শিক্ষাবর্ষ এবং আগামী শিক্ষাবর্ষ মিলিয়ে যেখানে যত ঘাটতি সব পূরণ করা সম্ভব হবে। অপর দিকে করোনা সংক্রমণের কারণে দ্বিতীয় দফা প্রায় দেড় মাস বন্ধের পর আবারো শুরু হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস। তবে আরো কিছু দিন বন্ধ থাকবে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ক্লাস। কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় যা শুরু হতে পারে আগামী ২০ মার্চ থেকে।
গতকাল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মনীষ চাকমা স্বাক্ষরিত প্রাথমিকের ক্লাস রুটিন থেকে জানা যায়, প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শ্রেণিকার্যক্রম কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ২০ মার্চ থেকে শিক্ষক সহায়িকায় প্রদত্ত রুটিনের আলোকে পরিচালিত হবে। ক্লাস রুটিনে বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ ঘাটতি চিহ্নিত করে বিশেষ শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালনার কথা বলা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে জানা যায়, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্লাস হবে প্রতিদিন (সপ্তাহে ছয় দিন)। আর বিদ্যালয় পরিচালিত হবে দুই শিফটে। তবে কোনো সমাবেশ হবে না। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে আসা নিরুৎসাহিত করা হবে। এ ছাড়াও টিকা দেয়া ছাড়া কোনো শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারবেন না।
শিক্ষার গতি ফেরানোর বিষয়ে গতকাল এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আশা করছি, শিগগির স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রমে ফিরে যেতে পারব। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে তারাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্লাসে ফিরে যাবে। আমরা যেভাবে রোডম্যাপ তৈরি করেছি সেই আলোকেই আশা করছি, শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।