বেহাল দশায় পিরোজপুরের সরকারি বিদ্যালয়!
প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক শ্রেণিকক্ষ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর শিক্ষক সংকট নিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন সরকারি স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম। শিক্ষার্থীর তুলনায় শ্রেণিকক্ষ কম। ফলে স্বাভাবিক পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জেলা সদরের বালক ও বালিকা বিদ্যালয় দুটি শতবর্ষী। দেশ বরেণ্য অনেক ব্যক্তি সৃষ্টিতে এ সব প্রতিষ্ঠান এক সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বর্তমানে সংকট ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে পিছিয়ে পড়ছে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
অভিভাবকদের নজরদারি কমে আসায় স্কুলে প্রবেশ করেছে রাজনীতি। তা ছাড়া অভিভাবকদের অসচেতনতা ও স্কুলের পরিবেশ ভালো না থাকায় শিক্ষার্থীরা অনেকেই স্কুলে আসে না। যারাও বা আসে তাদের স্কুল চলাকালীন বিভিন্ন মোড়ে আড্ডা দিতে দেখা যায়। অন্যদিকে শিক্ষকদের তদারকি কমে যাওয়া ও শিক্ষক অভিভাবকদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষা ব্যবস্থার এ দুরাবস্থা বলে অভিযোগ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।
পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আরিফ মোস্তফা বলেন, স্কুলের পাঠদান আগের মতো এখন আর চলে না। ছাত্ররা বিদ্যালয়ে এসে ড্রেস চেঞ্জ করে বাইরে ঘোরাফেরা করে। এজন্য শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। স্কুলে এসে শিক্ষার্থীর কোথায় যায়, কী করে, সেদিকে অভিভাবক ও শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে।
শ্রেণিকক্ষ সংকট সমাধানযোগ্য হলেও শিক্ষক সংকট অনেকটা সময় সাপেক্ষ। তবে শিক্ষার্থীদের এ দুরাবস্থার কারণ জানেন না শিক্ষকরাও। নৈতিক সংকট মোকাবিলায় অভিভাবকদের সচেতনতার সঙ্গে এগিয়ে আসার আহবান শিক্ষকদের।
পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ মজুমদার বলেন, শিক্ষার পরিবেশ কেন এ রকম হয়েছে সেটি আমি বলতে পারব না। তবে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। আমরা বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক রয়েছি। তবে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি দেয়াল ভাঙায় বহিরাগতরা বিদ্যালয় প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। বিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মাণ হলে বিদ্যালয় পরিবেশ ফিরে আসবে।
শ্রেণিকক্ষ সংকট মোকাবিলায় সরকারি ব্যবস্থাপনা পর্যায়ক্রমে চলছে। বরাদ্দ পেলে এ সব সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে বলে আশা করছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের।
তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ভবন সংকটের কারণে পাঠদান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষের সংকট কেটে গেলে সমস্যা সমাধান হবে এবং বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর রাখতে প্রশাসন যথেষ্ট আন্তরিক।
জেলার ৭টি উপজেলায় ৬টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৭ হাজার ৩০০ জন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়