ফাইল ছাড়তে ঘুষ না দেওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে পেটালেন অধ্যক্ষ
খুলনাঃ জেলার কয়রা কপোতাক্ষ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় অধ্যক্ষ অদৃশ আদিত্য মন্ডলের হাতে অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক দেব দুলাল তরফদারকে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবসর ভাতা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা ছাড় করতে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় সহকারী অধ্যাপককে ঘুষি মেরে ঠোঁট ফাটিয়ে দেন প্রতিষ্ঠানটির ওই অধ্যক্ষ।
গতকাল বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা সদরের কয়রা কপোতাক্ষ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক দেবদুলাল তরফদার জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়রা কপোতাক্ষ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ে সদ্য অবসরে যাওয়া দেবদুলাল তরফদার অবসরজনিত কাগজে সই করার জন্য উক্ত প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ অদৃশ আদিত্য মন্ডলের অফিস কক্ষে যান। পরে তিনি অবসরজনিত কাগজ ছাড় করতে অধ্যক্ষকে অনুরোধ করেন। এ সময় অধ্যক্ষ অধ্যাপক দেবদুলালের কাছে কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করেন।
এমন দাবির প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী অধ্যাপক দেবদুলাল অধ্যক্ষকে বলেন, আগে বিশ হাজার তো দিয়েছি স্যার, আমার ফাইলটি ছাড়িয়ে দেন। তখন ক্ষিপ্ত আদিত্য মন্ডল দেব দুলালের মুখে ঘুষি মেরে ফ্লোরে ফেলে দেন। এর পর তার পরিহিত কোর্টের কলার ধরে টেনে ফ্লোর থেকে তুলে পুনরায় মারধর করেন। এ সময় কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা এসে অধ্যক্ষের হাত থেকে তাকে ছাড়িয়ে নেন। এতে ভুক্তভোগী দেব দুলালের মুখ জখম হয়।
ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক দেবদুলাল তরফদার বিষয়টি নিয়ে জানান, তিনি গত ১৫ ডিসেম্বর তারিখে অসবর গ্রহণ করেন। নিয়ম অনুযায়ী তার অবসরজনিত সকল কাগজপত্র কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতির স্বাক্ষর যুক্ত করে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর কল্যাণ সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাষ্ট বোর্ডে পাঠাতে হয়। সে মোতাবেক তিনি সব কাগজপত্র প্রস্তুত করে অধ্যক্ষের স্বাক্ষরের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ ঘুরতে থাকেন। তার অবসর ভাতার টাকা ছাড় করতে ঘুষ না দিলে তার তা স্বাক্ষর হবে না বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামাল হোসেন ও উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিকে ঘটনাটি জানান।
এ ব্যাপারে কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয় ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ অদৃশ আদিত্য মন্ডল বলেন, আসলে সহকারী অধ্যাপক দেব দুলাল তরফদার মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষ। তার কাছে কোনো ঘুষের টাকা চাওয়া হয়নি। মাত্র সাতদিন আগে দেব দুলাল কাগজ জমা দিয়েছেন। সে অন্য কলেজেও চাকরি করেছেন। সুতরাং কাগজ প্রস্তুত করতে কিছু সময় তো লাগে। কিন্তু সে সেই সময় দিতে চাই না।
লাঞ্ছিত করার বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, দেব দুলাল তাকেই মারার করার চেষ্টা করে। সে প্রতিরক্ষার জন্য দেব দুলালকে ধাক্কা দেন। এসময় পাশে স্টিলের আলমারিতে আঘাত পেয়ে তিনি জঘম হয়েছেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০১/২০২৪