দেশে ধূমপায়ী কমেছে ৮ শতাংশ
নিউজ ডেস্ক।।
বাংলাদেশে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমেছে ৮ শতাংশ। ২০০৯ সালে দেশে ধূমপায়ীর সংখ্যা ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ থাকলেও বর্তমানে এই সংখ্যা কমে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মানস সভাপতি অরুপ রতন চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা: শারফুদ্দিন আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক অরুপ রতন চৌধুরী। তিনি জানান, তামাকজনিত মৃত্যু সারা বিশ্বে ৮০ লাখ। আর কোনো রোগেই এত বেশি মৃত্যু হয় না। সড়ক দুর্ঘটনা, হত্যাসহ আর কোনো ক্ষেত্রেই এত বেশি মৃত্যু ঘটে না। বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। বিশ্বের ১১০ কোটি ধূমপায়ীর মধ্যে ৮০ কোটির অবস্থানই নি¤œ ও মধ্য আয়ের দেশ।
এতে প্রকাশ্য ধূমপানে শাস্তি দাবি জানিয়ে বলা হয়, ৩০ শতাংশ কর্মস্থল ও ২১ শতাংশ পাবলিক প্লেসে নারী পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। এজন্য নারীরা ধূমপানে শিকার হয়ে ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ নারীদের মধ্যে ধূমপানের হার অত্যন্ত কম।
অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর আড়াই লাখ মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এখন নতুন করে ই-সিগারেট এসেছে। এটি ধূমপানের বিকল্প নয়, বরং সমানভাবে ক্ষতিকর। অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের দেশেও যেন ই-সিগারেট ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলা হয়, পুরনো যেসব আইন, নীতি, অধ্যাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণের সমস্যা সৃষ্টি করে, সেগুলো সংস্কারের মাধ্যমে যুগোপযোগী করতে হবে।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বা নীতিগুলোর রক্ষাকবচ খ্যাত এফসিটিসির আর্টিকেল ৫ দশমিক ৩ অনুসারে তামাক কোম্পানির প্রভাব বন্ধে গাইডলাইন প্রণয়নও জরুরি। বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে যারা অধিক তামাক ব্যবহার করে, তাদের একটি বাংলাদেশ। সুতরাং জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। তামাক কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার সময় এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অধ্যাপক ডা: মো: শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ থেকে বাঁচতে হলে ধূমপান অবশ্যই ছাড়তে হবে। একসঙ্গে চিনি এবং খোলা লবণ খাওয়া বাদ দিতে হবে। পুরুষের যৌন ক্ষমতা কমিয়ে দেয় ধূমপান।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালন করি অথচ বাসে বা উন্মুক্ত স্থানে সিগারেট খেলে যে তিন শ’ টাকা জরিমানা, সেটা দিতে কাউকে দেখি না। রাস্তায় যিনি সিগারেট খাবেন তাকে যদি জরিমানা করা হয়, তাহলে অন্যরা দেখে সিগারেট খাবে না। তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে ধূমপান বন্ধ করতে হবে।
মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক অরুপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, এইড ফাউন্ডেশনের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর সাগুফতা সুলতানা প্রমুখ।