জেষ্ঠ্য শিক্ষকদের কাণ্ডে স্তম্ভিত জবি
শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ সমন্বিত গুচ্ছ পরীক্ষার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের মারধরের ঘটনায় স্তম্ভিত প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, শিক্ষকরাই এমন কর্মকাণ্ড করলে তাঁরা শিক্ষার্থীদের কী শেখাবেন। দায়ীদের বিচারও দাবি করেছেন অনেকে।
গত বৃহস্পতিবার উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল সভায় ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কাদেরকে মারধর করেন তাঁর সহকর্মীরা। তাঁরা সবাই মূলত আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক।
সভায় অধ্যাপক কাদের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় থাকার পক্ষে মত দেন। এ সময় গুচ্ছের বিপক্ষের কয়েক শিক্ষক তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা শুরু করেন। এক পর্যায়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবুল হোসেন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ, দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজুল ইসলাম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আকরাম উজ্জামানসহ কয়েকজন মিলে অধ্যাপক কাদেরকে মারধর করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ট্রেজারার তাঁদের শান্ত করতে গিয়েও ব্যর্থ হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাকারিয়া মিয়া বলেন, শিক্ষকদের এমন আচরণ কাম্য নয়। শিক্ষকদের জন্য এমন ঘটনা মানানসই না। জাতির কাছে শিক্ষকদের নিয়ে নেগেটিভ বার্তা যায়। এ রকম আচার-আচরণ আমাদের বর্জন করা উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এসএম মাসুম বিল্লাহ বলেন, শিক্ষকদের আচরণ আরও সুন্দর ও পরিমার্জিত হওয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু সালেহ সেকেন্দার এ ঘটনার বিচার দাবি করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একজন ডিন এবং শিক্ষক সমিতির নেতা আমাদের একজন প্রিয় সহকর্মীর গায়ে হাত তুলেছেন। ঘটনার নিন্দা জানাই এবং ওই ডিনসহ অভিযুক্তদের শাস্তি চাই। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডিনকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেবেন। কারণ ডিনের দায়িত্ব শিক্ষকের গায়ে হাত দেওয়া নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে এমন আচরণ কাম্য নয়। শিক্ষকরা আমাদের অভিভাবক। তাঁদের আরও মার্জিত হওয়া দরকার।
উপাচার্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক বলেন, যাই ঘটেছে তা শিক্ষকদের কাছ থেকে কখনোই কাম্য নয়। এটা শিক্ষকসুলভ আচরণ না। এই সভায় একজন সদস্য হিসেবে পক্ষে-বিপক্ষে সবার কথা বলার অধিকার আছে। একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে আমাদের সামনে এমন একটা ঘটনা ঘটবে তা কাম্য ছিল না। শিক্ষকদের এমন ঘটনা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। এর জন্য আমি লজ্জিত, মর্মাহত।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৮/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়