চোখে অশ্রু, ৩য় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সুপারিশে এখনো বেতন নেই
মোঃ নাদিম মোস্তফাঃ তৃতীয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরসিএর সুপারিশে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির বেশ কিছু শিক্ষক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করে যাচ্ছেন। ২১শের নীতিমালায় মাধ্যমিক পর্যায় এক বছর মেয়াদি আডভান্স সার্টিফিকেট কোর্স ইন কম্পিউটার টেকনোলজি উল্লেখ আছে। যে সকল শিক্ষক এখনো এমপিও পাননি তারা এক বছর মেয়াদি ডিপলোমা ইন কম্পিউটার সাইন্স সার্টিফিকেট অর্জন করেন। এই সার্টিফিকেটগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যলয়,পাবলিক বিশ্ববিদ্যলয় ,বিসিএস এবং সরকারি আজিজুল হোক কলেজের যৌথ উদ্যোগে আইসিটি ইনস্টিটিউট, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এক বছরের কোর্স করার সুবাদে এনটিআরসিএ সেই সকল শিক্ষকদের নিয়োগ সুপারিশ করেন।
সুপারিশের পূর্বে আইসিটির সকল প্রার্থীর কাছ থেকে আইসিটি কোর্স সহ সকল সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করলেও এখনো বেতনের কোন ব্যবস্থা নেই।
৩৬জন আইসিটি শিক্ষকের সাক্ষরিত এমপিও জটিলতা নিরসনের আবেদন করেন সচিবলয়ে। পরবর্তী ১৪/০৫/২৩ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপসচিব মোঃ মিজানুর রহমানের সাক্ষরিত একটি চিঠি ইস্যু করেন মাউশি বরাবর। যার স্মারক নং-৩৭.০০.০০০০.০৭৪.০২৯.০০৪.২০১৮ (অংশ-১)-১০৫।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয় ৩য় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে যোগদান কৃত ৩৬জন আইসিটি শিক্ষকদের এমপিও জটিলতা নিরসনের জন্য মাউশির মতামত চাওয়া হয়। অথচ প্রায় দুই বছর পার হলো এই সকল শিক্ষকদের সমাধান হলো না ।
রায়পুর কুস্তা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ,নন্দীগ্রাম, বগুড়া, সহকারী (ডিজিটাল প্রযুক্তির) শিক্ষক মোঃ নাদিম মোস্তফা বলেন আমরা অনেক দিন যাবৎ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে ঘোরাফেরা করছি।আমাদের এ বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই ।আমরা অসহায় হয়ে গেছি আমাদের সংসার কিভাবে চলে এগুলো দেখার কেউ নেই। আমার বাড়ি নাটোরে বগুড়াতে নিয়োগ পেয়ে যোগদান করেছি । আমার পরিবারের পাঁচ সদস্য প্রতিমাসে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে প্রায় । ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে ২৭ মাস হলে যোগদান করেছি এরমধ্যে পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণে পড়েছি মাউশির মহাপরিচালক স্যারের প্রতি আকুল আবেদন এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য। কালাই জয়পুরহাট,জামুড়া-বাসুড়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ খাইরুল ইসলাম তার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বলতে গিয়ে অশ্রু চোখে বললেন আমার পরিবারের ৭ জন সদস্য উপার্জনের আমি ছাড়া কেউ নেই। ঋণ করে চলতে চলতে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছিনা। আমার পরিবারে শুধু অশান্তি বিরাজ করছে । দুই বাচ্চার পুষ্টিকর খাদ্য দুরের কথা দুই মটো ভাত দেওয়ার ক্ষমতা মনে হয় হারিয়ে ফেলবো।
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড আর মেরুদন্ডকে সোজা রাখার জন্য শিক্ষকের ভূমিকা অপরিহার্য । তাই সর্বোপরি এই শিক্ষকদের বীভৎস্য পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করার জন্য শিক্ষা অধিদপ্তর দায় এড়াতে পারে না।
লেখকঃ আইসিটি শিক্ষক, রায়পুর কুস্তা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নন্দীগ্রাম, বগুড়া।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/০৩/২০২৪