চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: ভর্তি না হয়েও করেন ক্লাস, হলে থাকেন দিপ্তি
চট্টগ্রামঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হননি, তবুও এক বছর ক্লাস করেছেন। সহপাঠীদের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন। ছাত্রলীগের সহায়তায় থাকছেন আবাসিক হলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে এভাবেই ভুয়া পরিচয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন দিপ্তি মনি। শেষে পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে গিয়ে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। প্রথম থেকেই ক্লাসে আসা শুরু করেন দিপ্তি। শিক্ষার্থীদের মতে, ভর্তি কার্যক্রমের সময়ও তিনি ইনস্টিটিউটে উপস্থিত ছিলেন। নবীনবরণসহ সব অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বাড়ি দাবি করে যুক্ত হন ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গেও। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে থাকার সুযোগ না থাকলেও দিপ্তি ছাত্র রাজনীতিকে ব্যবহার করে ঠাঁই করে নেন প্রীতিলতা হলে।
জানা যায়, প্রথম বর্ষের পরীক্ষার ফরম পূরণ করার সময় ক্লাসে অন্য শিক্ষার্থীর আইডি নিজের বলে দাবি করেন তিনি। এর আগেও আরেক শিক্ষার্থীর আইডি নিজের বলে দাবি করেছিলেন। তবে একই আইডি থেকে দু’জন আবেদন করলে জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসে। দিপ্তি মনি বলেন, তিনি শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ‘বি’ ইউনিটে ২১৪৫তম হয়ে ভর্তি হন। তবে এখনও আইডি পাননি। শিগগির আইডি পাবেন। তবে জালিয়াতির বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলে রিসিভ করেননি দিপ্তি।
জানা গেছে, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের ভর্তি তালিকায় দিপ্তির নাম নেই। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. গোলাম মহীউদ্দিন বলেন, বিভাগে তাঁর কোনো তথ্য নেই। তবে ভর্তির বিষয়টি ডিন অফিস থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলেও পাওয়া যায়নি দিপ্তির কোনো তথ্য। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ‘বি’ ইউনিটের পাঁচটি মেধা তালিকার কোনোটিতেই দিপ্তির তথ্য মেলেনি। ‘বি’ ইউনিট কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত। এ অনুষদের ডিন অফিস থেকে জানা যায়, ভর্তি হয়েছেন দাবি করে ডিন অফিসে গিয়েছিলেন দিপ্তি। সেখানেই ধরা পড়ে জালিয়াতি। অনুষদের ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাইফুল আবেদিন বলেন, ওই ছাত্রী ভর্তি হননি। আরেকজনের ভর্তি রশিদের ফটোকফি নিয়ে এসেছিলেন। তাও সেটা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের। তা গ্রহণ করা হয়নি।
জানা গেছে, প্রীতিলতা হলে উঠতে দিপ্তি সহায়তা নিয়েছিলেন ছাত্রলীগ সহসভাপতি ফাল্গুনী দাসের। জানতে চাইলে ফাল্গুনী দাস বলেন, এক রাজনৈতিক ছোট ভাইয়ের সুপারিশে তাকে হলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। তবে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয় জানা ছিল না।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৩/০৮/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়