ঈদে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়ান

ওমর ফারুক।।
সংবিধান একটি রাষ্ট্রের মৌলিক দলিল, যার ভিত্তিতে একটি রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। সংবিধান সব ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগের ২৮নং অনুচ্ছেদে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিকের সুযোগ-সুবিধার সমতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে একথা লিপিবদ্ধ হলেও আমাদের দেশের শিশুদের বড় একটা অংশ আজও ক্ষুধা, বৈষম্য, শিক্ষা-দীক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। কিন্তু ভাসমান প্রান্তিক শিশুদের ভাগ্যের পরিবর্তনে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। নগরীর রাস্তাঘাট, রেলস্টেশন, ওভারব্রিজসহ বিভিন্ন স্থানে তাকালেই আমরা অবহেলা-অনাদরে বেড়ে ওঠা পথশিশুদের দেখতে পাই, যাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

এসব পথশিশুর জীবন-জীবিকা নিশ্চিতকরণে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। এই শিশুদের কারও মা নেই, কারও বাবা নেই, কারও আবার বাবা-মা কেউ নেই। কীভাবে চলে তাদের জীবন? কীভাবে আসে তাদের জীবনে ঈদ? আমরা কি তা জানার চেষ্টা করি? আমরা একটু ইচ্ছা করলেই তাদের ভালো রাখতে পারি। আমাদের জাকাতের কিছু অংশ আমরা তাদের দিতে পারি। বড় শিল্পমালিকরা তাদের জাকাতের একটি অংশ যদি এই শিশুদের দেন, তাহলে তারা ভালোভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারে।

সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুরা আমাদের সমাজেরই একটা অংশ। তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানো আমাদের সবার মানবিক দায়িত্ব। এসব ছিন্নমূল শিশুর কেউ কেউ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আমরা যদি তাদের পাশে দাঁড়াই, তাদের জন্য শিক্ষা, খাদ্য ও নিরাপদ আবাসস্থলের ব্যবস্থা করে দেই, তাহলে সার্বিকভাবে আমাদের সমাজই উপকৃত হবে। তাই যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো, তারা যেন ছিন্নমূল শিশুদের সাহায্য করেন। বর্তমানে খাদ্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি, তাতে অনেক পথশিশুর ভাগ্যে খাওয়াই জোটে না, ঈদে নতুন জামা কেনা তো দূরের কথা।

পরিশেষে বলতে চাই, আসুন আমরা সবাই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়াই। আর সরকারেরও উচিত তাদের দিকে দৃষ্টি দেওয়া। কারণ, তারাও দেশের নাগরিক, তাদের মৌলিক অধিকারগুলো পাওয়ার ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

ওমর ফারুক : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ