৩৫ দিন পর কলেজ খোললেও আসেনি অধ্যক্ষ
নড়াইল সদর উপজেলা মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের আধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার ঘটনায় এক মাস পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর রোববার খুলেছে ওই কলেজ।
শিক্ষকরা সবাই এলেও লাঞ্ছিত সেই অধ্যক্ষ এবং শিক্ষার্থীরা কলেজে উপস্থিত ছিলেন না। তবে সোমবার সংক্ষিপ্ত আকারে এবং কয়েক দিন পর পুরোদমে ক্লাস চলবে বলে জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
রোববার কলেজ খোলার পর পরিদর্শন শেষে অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার ঘটনায় নড়াইল জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দীর্ঘ একমাস পাঁচ দিন কলেজ বন্ধ ছিল। অবশেষে রোববার কলেজ খুলেছে। সোমবার থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর শিগগিরই পুরোদমে শ্রেণি পাঠদান ও একাডেমিকসহ কলেজের সার্বিক কার্যক্রম চালু করার বিষয়টি নিশ্চিতকরণের জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পরিচালনা পর্ষদকে অনুরোধ করেছেন বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুন কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় ওরফে বাপ্পী রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে পোস্ট করেন- ‘প্রণাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রীরাম’। বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে কলেজের কিছু ছাত্র তাকে সেটি মুছে (ডিলিট) ফেলতে বলেন। এরপর ১৮ জুন সকালে অভিযুক্ত ছাত্র কলেজে আসলে তার সহপাঠীসহ সব মুসলিম ছাত্র তার গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাৎক্ষণিক বহিষ্কারের দাবি তুলে অধ্যক্ষের কাছে বিচার দেয়। কিন্তু ওই সময় অধ্যক্ষ একই সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় তাকে রক্ষা করার চেষ্টায় ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন- এমন কথা রটানো হলে উত্তেজনা তৈরি হয়।
একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত জনতার মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এরপর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের উপস্থিতিতেই উত্তেজিত জনতা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত ছাত্রের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায়ও জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করে।