সব শিক্ষার্থীকে অনলাইন শিক্ষার আওতায় আনা হোক
নিউজ ডেস্ক।।
বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসছে না, আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলছে না। একাধিকবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর আলোর মুখ দেখেনি। বিভিন্ন স্তরের কয়েক কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেবল প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেই শিক্ষার্থী আছে ১ কোটি ৭৬ লাখেরও বেশি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে সেটা এখনও অনিশ্চিত। প্রাথমিকের সব শিক্ষার্থীকে গুগল মিট-এর মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সমস্যা হচ্ছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বড় একটি অংশেরই তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে নেই কোন প্রশিক্ষণ।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের করা জরিপ থেকে জানা যাচ্ছে, সরকারি-বেসরকারি ১ লাখ ৩৩ হাজারেরও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ ৪১ হাজার। এদের মধ্যে ৮৮ ভাগেরই তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণ নেই।
প্রশ্ন হচ্ছে, প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকরা অনলাইনে ক্লাস নেবেন কী করে। বিপুল সংখ্যক শিক্ষককে যে দ্রুতই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা যাবে সেই ভরসা করা যায় না। কোনভাবে তাদের যদি প্রশিক্ষণ দেয়াও হয় তাহলেও কী প্রাথমিকে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার উদ্যোগ সফল হবে?
প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশই গ্রামে বাস করে। চর ও হাওরের মতো দুর্গম এলাকায় রয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। এসব শিশুর বেশিরভাগের অভিভাবকেরই অনলাইনে ক্লাস করার মতো স্মার্ট ফোন বা অন্য কোন ডিভাইস নেই। তাদের হাতে হাতে ডিভাইস পৌঁছে দেয়ার চিন্তা বাস্তবসম্মত নয়। ইন্টারনেটের ধীরগতিও একটি সমস্যা।
বিভিন্ন স্তরে অনলাইন শিক্ষার আগের অভিজ্ঞতা সুখকর হয়নি। প্রাথমিক স্তরের সবাইকে অনলাইন শিক্ষার আওতায় আনার উদ্যোগ কতটা বাস্তবসম্মত সেটা একটা প্রশ্ন। আকাশকুসুম ভাবনা দিয়ে শিক্ষার বিদ্যমান সংকট দূর করা যাবে না। সব দিক বিবেচনা করে এমন পরিকল্পনা নিতে হবে যা বাস্তবায়নযোগ্য। আমলানির্ভর পরিকল্পনা দিয়ে সাফল্য পাওয়ার আশা না করাই ভালো। শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।