জাহাঙ্গীরনগরে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দীর্ঘ আঠারো মাস পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হয়। এর আগে ১১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্রত্যেক বিভাগে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় ফুল আর চকলেট।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বিভাগের নির্দেশনা ছিল, করোনার টিকার অন্তত এক ডোজ যেসব শিক্ষার্থী নিয়েছেন শুধু তারাই সশরীরে ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণিকক্ষে আসতে বলা হয়। সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনে বিভাগে এসব নির্দেশনা মানতে দেখা গেছে। সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনেও শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আল আমিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর ক্লাসে ফিরতে পেরে আনন্দিত। আজকে অনেকদিন পর শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ক্লাসে ফিরতে পেরে ভালো লাগছে। এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের মতো নয়।’
আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী বিপ্লব কান্তি সরকার বলেন, আমরা ক্লাসে ফিরতে পরে আনন্দিত। সবার সঙ্গে আবার একসঙ্গে ক্লাসরুমে বসছি। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্লাসরুমের আড্ডাটাও হচ্ছে। সবমিলিয়ে আবার সেই পুরনো স্পৃহা ফিরে এসেছে। এই আনন্দ আসলে বহু প্রতীক্ষিত। যা মুখের ভাষাতে পুরোপুরি প্রকাশ করা সম্ভব না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সভাপতি শেখ আদনান ফাহাদ বলেন, ‘গত দেড় বছর ধরে অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা নিয়েছি। কিন্তু শ্রেণিকক্ষে পাঠদান এবং পাঠ গ্রহণের যে আনন্দ সেটি ছিল না। কারণ শিক্ষার্থী ছাড়া শ্রেণিকক্ষ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আসলে শুকিয়ে যাওয়া নদীর মতো বলেই মনে হয়। সেই জায়গা থেকে, আজ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা ফিরে আসায় আনন্দের পাশাপাশি একটি বাড়তি দায়িত্ব এসেছে। এখনকার নতুন পরিস্থিতিতে আমরা অনলাইন এবং অফলাইনের সমন্বয়ে একটি মিশ্র পদ্ধতিতে আগামী দিনের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘হল খোলার পর আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থী ছাড়া ক্যাম্পাস আসলে শূন্য। আজকে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণের স্পন্দন ফিরে পেয়েছে। সবার সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।