দীর্ঘ ৯ মাস আটকে আছে প্রাথমিক শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড
অনলাইন ডেস্ক :
সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর দীর্ঘ ৯ মাস পার হলেও নতুন গ্রেডে প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক এখনো বেতন ভাতা সুবিধা পাচ্ছেন না। ফলে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রজ্ঞাপন জারির গত ২৮ সেপ্টেম্বর মাঠ পর্যায়ে এটি বাস্তবায়ন করতে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কাছে ফাইলটি পাঠানো হয়। হিসাব মহানিয়ন্ত্রক এটি অনুমতি প্রদান করার পর ‘আইবাস++’ সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, প্রায় দু’মাস হতে চলেছে অথচ কোনো অজানা কারণে ফাইলটির অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক পদে একজন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এ বিষয়ে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ দেখায়।
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক মাহবুবর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসনে দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকারের কাছে আমরা ১১তম গ্রেডে বেতন দাবি করেছি। এরপর ১৩তম গ্রেড পেয়েছি। অথচ আজও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গত সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড-১৪ (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) এবং বেতন গ্রেড-১৫ (প্রশিক্ষণ বিহীন) থেকে বেতন গ্রেড-১৩ তে উন্নীত করে উচ্চ ধাপে নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, বর্তমানে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারিত সফটওয়্যার ‘আইবাস++’ এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। প্রাথমিক শিক্ষকদের উচ্চ ধাপে বেতন নির্ধারণের লক্ষ্যে ‘আইবাস++’ সফটওয়্যার আপগ্রেডের কাজ চলমান, যা শিগগিরই সম্পন্ন হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) মো. হাসান সরওয়ার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আর্থিক বিষয় কার্যকর করতে একটু সময় লাগে। এক্ষেত্রে টাকা একবার কারো এ্যাকাউন্টে চলে গেলে তা ফেরত আনা সম্ভব নয়। তবে বিষয়টি শিগগিরই নিষ্পত্তি হবে। এর জন্য অর্থ বিভাগে একটি ডেডিকেটেড সেল আছে। যার দায়িত্বে একজন সিনিয়র যুগ্ম সচিবও আছেন।
তিনি আরো বলেন, এটি যেদিনই এটি কার্যকর হোকনা কেনো শিক্ষকরা বকেয়া বেতন-ভাতা পাবেন। এ কারণে শিক্ষকদের ব্যতিব্যস্ত না হতে তিনি অনুরোধ করেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, কাজ প্রায় শেষের দিকে তবে এ জন্য শিক্ষকদের আরো একমাস অপেক্ষা করতে হতে পারে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সারা দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৫২ হাজার সহকারী শিক্ষক আছেন। তাদের ৬০ শতাংশই নারী। জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে বেতনের দীর্ঘদিনের দাবির পর শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতনে দেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।