পাঁচ শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে টাকা তুলে নিলেন ইনস্ট্রাক্টর
নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইলঃ জেলার মির্জাপুর উপজেলার রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসি) ইনস্ট্রাক্টর মো. আব্দুর রহিম পাঁচজন সহকারী শিক্ষা অফিসারের (এটিইও) স্বাক্ষর জাল করে টাকা তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ওই পাঁচজন এটিইও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
পিএইচডি না করেও ইনস্ট্রাক্টর আব্দুর রহিম তার নামের আগে ডক্টর লিখেন। এছাড়া তিনি প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া প্রশিক্ষার্ণীদের কাছ থেকেও ৫০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা সদরের সরিষাদাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে গত বছরের ১৫ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত গণিত অলিম্পিয়াড প্রশিক্ষণ হয়। এতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঁচজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা লিপিকা রানী সাহা, মো. ইমরান হোসেন, মারুফা খাতুন, শর্মিলা রানী মজুমদার ও আব্দুল মালেককে ‘সাপোর্ট অফিসার’ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে ইনস্ট্রাক্টর আব্দুর রহিম বিষয়টি তাঁদের জানাননি। প্রশিক্ষণের শেষ দিনে তিনি তাঁদের প্রত্যেকের নামে আলোচকের খাবার ভাতা বাবদ ১ হাজার ৬৮০ টাকা ও সম্মানী বাবদ ৮০০ টাকা হিসেবে পাঁচজনের ১২ হাজার ৪০০ টাকা উত্তোলন করেন।
এর দুই মাসেরও বেশি সময় পর ওই পাঁচজন সহকারী শিক্ষা অফিসার বিষয়টি জানতে পারেন। তাঁরা ওই প্রশিক্ষণে সাপোর্ট অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন ও ভাতা নেননি মর্মে প্রথমে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে একটি প্রত্যয়ন দেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় গত ১২ জানুয়ারি ওই ইনস্ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি মির্জাপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আল মামুন খান জানান, ইনস্ট্রাক্টর মো. আব্দুর রহিম পিএইচ ডি না করেও তার নামের আগে ডক্টর লিখেন। এছাড়া প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া প্রশিক্ষার্ণীদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা করে নিয়ে থাকেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন জানান, যে প্রশিক্ষণে তাঁদের পাঁচজনকে ‘সাপোর্ট অফিসার’ হিসেবে দেখানো হয়েছে সেখানে আমাদের থাকার বিধান নেই। তারপরও আমাদের নাম দিয়ে ইনস্ট্রাক্টর আব্দুর রহিম স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। এ বিষয়ে সম্মিলিতভাবে অভিযোগ দাখিল করেছি।
ইনস্ট্রাক্টর মো. আব্দুর রহিম বলেন, যে কোন ভাবেই টাকা উত্তোলন করা হয়েছিলো। সেই টাকা আবার সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষনার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পিএইচডি করেছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, এক বিষয়ে কথার মধ্যে অন্য বিষয় না আনাই ভালো।
টাঙ্গাইলের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র্রের সুপারিনটেনডেন্ট অমল চন্দ্র সরকার জানান, অন্যের বিষয়টি আমার জানা আছে। তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়