খরচ কমানোর পথেই হাঁটছে সরকার
নিউজ ডেস্ক।।
কোভিড-১৯ মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় চাপের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতিও। এ অবস্থায় অর্থনীতিতে স্বস্তি ফেরাতে এরই মধ্যে ব্যয় কমানোর পথে হাঁটা শুরু করেছে সরকার, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও বহাল থাকবে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পরিচালন বাজেট বরাদ্দ থেকে ভূমি অধিগ্রহণ, ভবন ও স্থাপনার নতুন ক্রয়াদেশ এবং যন্ত্রপাতি কেনা পুরোপুরি স্থগিত থাকবে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্রও জারি করেছে অর্থ বিভাগ।
চলমান বৈশ্বিক সংকটে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে। ডলারের দাম ১২০ টাকায় ওঠার পর কিছুটা কমলেও সংকট কাটেনি। এখনো ব্যাংকগুলো চাহিদামতো এলসি খুলতে পারছে না। অন্যদিকে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধিও কাক্সিক্ষত হারে বাড়ছে না। অথচ আমদানি ব্যয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাড়ছে মূল্যস্ফীতির চাপও।
এদিকে রাজস্ব আদায়েও নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে। যার ফলে সরকারের বাজেট বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দিতে করোনা মহামারীর মাঝামাঝিতে ব্যয় সংকোচননীতি গ্রহণ করেছিল সরকার। এতে বিদেশ ভ্রমণে নিয়ন্ত্রণারোপ
করা হয়। বিলাসী পণ্যের আমদানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবু আমদানি ব্যয় বাড়ছে হু হু করে। যার ফলে বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্যহীতা দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, মৌলিক প্রয়োজনের বাইরে খরচ করতে চাচ্ছে না সরকার। এ জন্য উন্নয়ন এবং পরিচালন উভয় ধরনের ব্যয় সংকোচননীতি বেছে নেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, বিলাসী ব্যয়, বিদেশ ভ্রমণ, এমনকি দেশের অভ্যন্তরেও যাতায়াত খরচ কমানোর কৌশল গ্রহণ করা হয়।
এসব পদক্ষেপেও কাক্সিক্ষত ফল না আসায় আগামী বাজেটেও ব্যয় কমানোর নীতিই বলবত থাকবে। একই সঙ্গে বাজেট প্রণয়নের সময় বাজেট ব্যয়ের নতুন নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে এনবিআরের রাজস্ব আদায় বাড়াতে সব ধরনের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। ব্যবসাবাণিজ্যে অচলাবস্থার কারণে সরকারের রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ জন্য ভ্যাট আদায় বাড়াতে দোকানে দোকানে ইসিআর মেশিনের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। অনলাইনে যেসব লেনদেন বা কেনাকটা হচ্ছে, সেগুলোর বিষয়েও তদারকি বাড়ানো হচ্ছে।
এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে দেশের রাজস্ব আদায় ঘুরে দাঁড়ালেও গত ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ফের ধাক্কা খেয়েছে। আর সেই ধাক্কা এখনো শামলে উঠতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাহুল্যজনিত ব্যয় পরিহার করার কথা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। করোনাকালে সেটা করে যদি খরচের কৃচ্ছ্রসাধন করা যায়, তা হলে অবশ্যই সেটি ভালো।’