এশিয়া কাপ শিরোপার অন্যতম দাবিদার বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
সিলেটে চলছে নারীদের এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। যেখানে প্রথম ম্যাচ জয় দিয়ে বাংলাদেশ শিরোপা ধরে রাখার মিশনে নেমেছে।
বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল। ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ায় সবশেষ আসরের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশের বাঘিনীরা।
এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশিবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। নারী ক্রিকেটের এই টুর্নামেন্টে মোট ৩৩ ম্যাচ খেলে ৩১টিতেই জয় পেয়েছে ভারত।
বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদ মনে করেন, সাম্প্রতিক যেসব টুর্নামেন্টে তারা খেলেছে সেখানে ভালো করেছে। এটা দলের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস জোগান দিয়েছে।
রুমানা প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে অবদান রেখেছে।
সময়টা বাংলাদেশ নারী দলের জন্য ভালো যাচ্ছে
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল এই আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন, সেই টুর্নামেন্ট হয়ে গেছে চার বছর আগে। কিন্তু সাম্প্রতিক পারফরমেন্স বিবেচনায় নিলেও বাংলাদেশ দলের অবস্থান ভালো।
এই বছর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রত্যাশার চেয়েও ভালো পারফর্ম করেছে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ম্যাচ জিতেছে- যেটি বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের প্রথম বিশ্বকাপের মূলপর্বে জয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি ম্যাচে চার রানের ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
গত মাসেই বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলেছে। যেখানে সবগুলো ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ।
সংযুক্ত আরব আমিরাত, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ডের মতো দলগুলোকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ এখন বড় দলগুলোর বিপক্ষে জয়ের জন্যই খেলে।
ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ বেশ কিছু মুহূর্তে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল।
এই সব দলের তুলনায় বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের সুযোগ সুবিধা, স্পন্সর এবং অবকাঠামো বেশ দুর্বল। কিন্তু এইসব সুযোগ সুবিধা মাঠের খেলায় বাংলাদেশের ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি।
টপ অর্ডারের ব্যাটিংটা বড় একটা ফ্যাক্টর হবে
বাংলাদেশ এখনো ভারত-পাকিস্তানের মতো দলগুলোর মুখোমুখি হয়নি। সেখানে টপ অর্ডারের ব্যাটিংটা বড় প্রশ্নের মুখোমুখি হবে বলে মনে করেন ক্রিকেট বিশ্লেষক সাজ্জাদ খান।
তার মতে, বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে প্রথম ছয় ওভারে ৫০ এর মতো রান করেছে। ভারত পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩০-৪০ রান করতেই হবে।
সাজ্জাদ খান বলেন, টপ অর্ডারের ব্যাটিং ভারত-পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলায় চ্যালেঞ্জে পড়বে। অন্তত ৪০ রানের মতো প্রয়োজন হবে সেখানে। ১৩০-১৪০ রানের মতো পুঁজি গড়তে হবে।
বাংলাদেশের মূল শক্তির জায়গা- স্পিন বোলিং
বাংলাদেশের স্পিনার রুমানা আহমেদের মতে বাংলাদেশের প্রধান শক্তির জায়গা স্পিন। সেটা নিয়েই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
সাজ্জাদ খান বলেন, বাংলাদেশের ম্যানেজমেন্ট নিজেদের শক্তিমত্তা ও উইকেটের ধরন সম্পর্কে সচেতন। ফাহিমা, রুমানা দুইজন লেগ স্পিনার আছেন। সোহেলী আছেন অফস্পিনার, সানজিদা মেঘলা এরা সবাই স্পিনার কোয়ালিটি স্পিনার।
সাজ্জাদ সালমা খাতুনকে নিয়ে আলাদাভাবে বলেন, সালমা খাতুন ও নাহিদা মূল স্পিনার- অফস্পিনার ও বাঁহাতি স্পিনার মূল ভূমিকা পালন করছেন।
তার মতে, এই স্পিনার এতটাই অভিজ্ঞ এখন যে বিশ্বের যে কোনো দলের সেরা ব্যাটাররা তাকে ফেস করতে খানিকটা সতর্ক থাকেন।
স্পিন কার্যকরী প্রথম ম্যাচেই সেটা প্রমাণিত হয়েছে তবে পেসাররা ভালো ফর্মে নেই বলেন সাজ্জাদ খান।
স্পিন যেহেতু শক্তির জায়গা, এটা দিয়েই প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে।
প্রায়ই দেখা যায় স্পিনাররাই বেশিরভাগ উইকেট নিচ্ছেন।
সাজ্জাদ খান এই দলটির আরো একটি শক্তির জায়গা হিসেবে দেখেন স্পিন বোলিংয়ের বৈচিত্র্য।
তিনি বলেন, রুমানা, ফাহিমা, সানজিদা, সোহেলি পাঁচজন স্পিনার পাঁচ ধরনের। এই বৈচিত্র্যের কারণে এটা প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন হয়ে উঠবে।
সম্প্রতি জাতীয় লিগও হয়েছে সিলেটে। সেখানে স্পিনারদের দাপট ছিল।
বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা বেশ ফর্মে আছেন। সম্প্রতি বাছাইপর্বে তিনি ১৮০ রান তুলেছেন এবং তিনি থাইল্যান্ডের বিপক্ষেও ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়েছেন।
সূত্র : বিবিসি