প্রবেশপত্র পাবে পরীক্ষার্থীরা; বাড়ছে গোয়েন্দা নজরদারি
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক সরকারি নিয়োগের লক্ষ্যে এবার প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিন ধাপের পরীক্ষার প্রথম ধাপে আগামী ২২ এপ্রিল শুক্রবার ২২ জেলায় এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আজ রোববার থেকে পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে প্রতিটি পরীক্ষার কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। গুরুত্বের বিবেচনায় এবার প্রত্যেক কেন্দ্র থাকবে মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে। এ ছাড়া কেন্দ্রে বসানো হচ্ছে জ্যামার ।
বাড়ানো হবে গোয়েন্দা নজরদারিও। সূত্র জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষা আগামী শুক্রবার ২২ জেলায় অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে গোয়েন্দা নজরদারি ও পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রাখতে জ্যামার বসানোসহ বিভিন্ন নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সাথে আজ রোববার থেকে প্রথম ধাপের পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্র , প্রথম ধাপে আগামী ২২ এপ্রিল মোট ২২ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আবেদনকারী প্রার্থীরা নিজ নিজ জেলায় পরীক্ষা দিতে পারবেন।
এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা ২০ মে এবং তৃতীয় ধাপে আগামী ৩ জুন পরীক্ষা হবে। গত বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা হবে। এ দিকে পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনায় বলা হয়েছে পরীক্ষার হলে প্রার্থীদের প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট কপি ও জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে আনতে হবে। ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলি ও অন্যান্য তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এবং প্রবেশপত্রে দেয়া থাকবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে যাতে কেউ পরীক্ষার হলে অসদুপায় অবলম্বন করতে না পারেন, এ জন্য কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট এলাকায় জ্যামার বসানো হবে। পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রাখতে এসব জ্যামার বসানো হবে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকবে।
প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য ডকুমেন্ট ঢাকা থেকে জেলার ট্রেজারি সংরক্ষণ এবং উত্তরপত্র পৌঁছানো হবে। তা ছাড়া যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিকস কমিউনিকেটিভ ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষার্থীরা যাতে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারেন, এ জন্য প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। নারী প্রার্থীদের কানে কোনো ডিভাইস আছে কি না, তা কঠোরভাবে যাচাই করা হবে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ঠেকাতে বিটিআরসি ও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করবে।
আগামী ২২ এপ্রিল প্রথম ধাপে যেসব জেলার সব উপজেলায় পরীক্ষা হবে সেগুলো হলোÑ ঢাকা, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মাগুরা, শেরপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, লালমনিরহাট। আর যেসব জেলার কিছু উপজেলায় পরীক্ষা নেয়া হবে সেগুলো হলোÑ যশোর (ঝিকরগাছা, কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা), সিরাজগঞ্জ (উল্লাপাড়া, বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দ, কাজীপুর), ময়মনসিংহ (ভালুকা, ধোবাউড়া, ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও, গৌরীপুর, হালুয়াঘাট, ঈশ্বরগঞ্জ), নেত্রকোনা (আটপাড়া, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া), কিশোরগঞ্জ (অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, ভৈরব, হোসেনপুর, ইটনা, করিমগঞ্জ, কটিয়াদী), টাঙ্গাইল (সদর, ভুয়াপুর, দেলদুয়ার, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, গোপালপুর), কুমিল্লা (বরুড়া, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, সদর, মেঘনা, দাউদকান্দি) ও নোয়াখালী (কবিরহাট, সদর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী ও সুবর্ণচর)।