কুবি প্রতিনিধি :
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) ক্যাম্পাস সম্মুখে শাখা ছাত্রলীগের স্থাপন করা দুটি গতিরোধক ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে আবারো বখাটে বাইকার ও বেপরোয়া চালকদের আতঙ্ক এবং সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
গত ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হল ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে স্পিডব্রেকার বা গতিরোধক বসানো হয়। তবে ঈদুল আজহার ছুটি চলাকালে প্রধান ফটক ও নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের সামনের গতিরোধক তুলে নেওয়া হয়।
যদিও নিয়মিত এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী একাধিক চালকের অভিযোগ, গতিরোধক তিনটি যথাযথভাবে স্থাপন করা হয়নি, যার ফলে যানবাহন চলাচলের সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি ছিল। তবে আলোচনা না করেই গতিরোধক তুলে নেওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তাদের অভিযোগ, ঈদুল আজহার ছুটিতে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকাকালীন সময়ে দুর্বৃত্তরা কাউকে না বলেই গতিরোধক তুলে ফেলে।
গতিরোধক তুলে নেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ্ আল সিফাত বলেন, ‘এই রাস্তায় একাধিক মোড় রয়েছে। এর মধ্যেই মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন দ্রুতগতিতে চলাচল করে। গতিরোধক দেওয়ার পর দ্রুতগতি হ্রাস পেলেও সেগুলো তুলে নেওয়ায় আবারো চালকরা বেপরোয়া আচরণ করছে। আবারো আমাদের চলাচলে ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।’
নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী বিলকিস জান্নাত কিরণ জানান, ‘গতিরোধক তুলে নেওয়ায় ছাত্রী হলের সামনে বেপরোয়া যান চলাচল ফের বেড়ে গেছে। হলের সামনে এলেই বখাটেদের মোটরসাইকেলের গতি বেড়ে যায়। আমরা অনেক সময় হলের ফটকে থাকি, তখন তটস্থ থাকতে হয় হঠাৎ বুঝি মোটরসাইকেল বা অন্যান্য কোনো যানবাহন গায়ের উপর উঠে গেল।’
ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ নিজ উদ্যোগে গতিরোধক বসালেও সেটি তুলে ফেলার আগে তাদের সাথে চালক বা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। তাই গতিরোধক তুলে নেওয়ার কাজটি কে বা কারা করেছে তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নিজেদের টাকায় এই গতিরোধকগুলো নির্মাণ করেছিলাম। কে বা কারা এই গতিরোধক তুলে ফেলেছে তা প্রশাসনের খতিয়ে দেখা উচিত।’
শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখ থেকে গতিরোধক তুলে নেওয়ার মতো ঘৃণিত কাজ আর হতে পারে না। আমাদের ধারণা স্থানীয় কিছু উচ্ছৃঙ্খল, বখাটে চালকরাই এই কাজগুলো করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ ব্যাপারে খোঁজ রাখা উচিত ছিলো।’
তবে সপ্তাহখানেকের মধ্যে তারা (শাখা ছাত্রলীগ) আবারও গতিরোধকগুলো পুনঃস্থাপন করবেন বলে জানান।
গতিরোধক তুলে নেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাকে কোনো নিরাপত্তাকর্মী অবহিত করে নাই। কারা এটা করেছে জানি না। তবে আমি এটা দেখেছি। উপরমহলে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের মাঝে স্থানীয় কেউ এটা করে থাকতে পারে। তবে এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টদের বলবো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.