এইমাত্র পাওয়া

বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে

মোঃ আবুল হোসেন ।।
দেশের সার্বিক উন্নয়ন নির্ভর করে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর।শিক্ষিত জাতির ওপরই নির্ভর করে দেশের উন্নয়ন। দেশের উন্নয়নে মূখ্য ভূমিকা পালন করে শিক্ষক বৃন্দ। দেশের উন্নয়নের জন্য চাই শিক্ষা ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিবেশ।  শিক্ষা ব্যবস্থায় যদি সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকে তাহলে দেশের  উন্নয়নের ওপর তার প্রভাব পড়বে।  শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণ হলো শিক্ষক। শিক্ষকদের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষিত জাতি গঠনে প্রয়োজন শিক্ষক। শিক্ষকরাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে গড়ে তুলে শিক্ষিত জাতি, শিক্ষিত সমাজ, শিক্ষিত মানব সম্পদ। যাদের দ্বারা দেশের উন্নয়ন সাধিত হয়। দেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত হয়।
 কথায় আছে ,যে দেশ যত বেশি শিক্ষিত সে দেশ তত বেশি উন্নত। আর একটি দেশের  উন্নয়নের রুপকার শিক্ষক সমাজ। শিক্ষকরাই জাতি গঠনের নিপুণ কারিগর। শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজন রেখে উন্নত জাতি গঠন সম্ভব নয়। উন্নত জাতি গঠন সম্ভব না হলে দেশের উন্নয়ন   পিছিয়ে যেতে বাধ্য।এক পর্যায়ে  দেশের উন্নয়ন স্থবির হয়ে পড়বে। উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজন বৈষম্যহীন শিক্ষা ব্যবস্থা।  শিক্ষা ব্যবস্থার বৈষম্য দূরীকরণ না হলে উন্নয়নশীল দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হবে।যেহেতু দেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
 উন্নয়ন মানে দারিদ্র্য সীমার ওপরে বসবাস করা এবং সমান সুযোগ সৃষ্টি করা।  বিশ্বের কোন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভাজন আছে বলে জানা  নেই। বিভাজন কোন দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভাজন থাকা মানে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হওয়া।  বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভাজন থাকার কারণে  আজ সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের স্বীকার  বেসরকারি শিক্ষক সমাজ। শিক্ষা ব্যবস্থায় সমতায়ন জরুরি।
গর্বের বিষয় বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছে গেছে। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় দ্বিতীয় এবং ভারত তৃতীয়। আমাদের দেশের উন্নয়ন হয়েছে এবং হচ্ছে।  মান মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে আজ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার  স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। আজ বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাড়াচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা রয়ে গেল প্রাণহীন। বৈষম্যের বেড়াজালে পড়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা। যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততই বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় দেখা দিচ্ছে শিক্ষক অসন্তোষ। শিক্ষকরা হচ্ছে আন্দোলনের মুখোমুখি। প্রতিবাদ স্বরূপ পালন করা হচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচি – মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি,অনশন, ঘেরাও কর্মসূচি ইত্যাদি। শিক্ষকরা দাবি আদায়ের জন্য রাজ পথে অবস্থান নিতে হয় তা সত্যিই উন্নয়নশীল দেশের জন্য হতাশাজনক।   যা শিক্ষা ব্যবস্থার স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। উন্নয়নে কিছুটা হলেও তার প্রভাব পড়ছে। স্বাভাবিক কাজ কর্ম ব্যাহত হচ্ছে। উন্নয়ন হচ্ছে বাধাগ্রস্ত।
আজ কিছু দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থার বৈষম্যের অবসান হচ্ছে না। বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করলে সরকারের বাড়তি কোন খরচ হবে না। যদি প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যয়ের হিসেব সরকার বুঝে নেয় তাহলে জাতীয়করণ করলে সরকারের লাভই হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়  প্রকৃত হিসেব সরকারকে না বুঝিয়ে বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে শিক্ষকদের। ক্ষতি হচ্ছে সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থায়।  বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে প্রায় সব সেক্টরে। কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় আজও প্রকৃত উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি।বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা রয়েই গেল পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। যেখানে পৃথিবীর  বিভিন্ন দেশের শিক্ষকরা পায় সর্বোচ্চ সম্মান এবং মর্যাদা।  কিন্তু বাংলাদেশের চেয়ে ভারতের শিক্ষকদের সম্মান বেশি। কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা দুই ধারায় বিভক্ত। সরকারি এবং বেসরকারি। সরকারিরা পায় সম্পূর্ণ সুযোগ সুবিধা আর বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পায় অর্ধেক সুযোগ সুবিধা। পাঠ্যক্রম এক এবং পাঠ্যপুস্তকের বিষয় বস্তু ও এক। শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা সমান। তবুও শিক্ষা ব্যবস্থা দুই ধারায় বিভক্ত। সরকারি এবং বেসরকারি মিলে তো উন্নয়নের ধারা ত্বরান্বিত হয়। উন্নয়ন মানে সকলের সমান সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা কিন্তু তার অবসান এখনো হলো না। কেউ নেই দেখভাল করার।   কাজের বিনিময়ে যেহেতু  পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। তাহলে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারি ন্যায় কাজ করে পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে কেন?
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় দুই ধরনের নীতি অবলম্বন করা হয়। এক হলো পূর্ণ সুযোগ সুবিধা ভোগকারী অপরটি হলো অর্ধেক সুযোগ সুবিধা ভোগকারী। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক মানে হতাশা বিরাজমান বাস্তব জীবন।যে দেশ বৈষম্যের চোরাবালিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। সে দেশের উন্নয়ন যতোই হউক বৈষম্যের কারণে  ঠিকই একদিন উন্নয়ন  স্থবির হয়ে পড়বে । শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন একটি দেশের মেরুদণ্ড। মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে গেলে যেমন সোজা হয়ে হাটা যায় না। তেমনি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ব্যবতীত দেশের উন্নয়ন ফলপ্রসূ হবে না।
শিক্ষা ব্যবস্থা দূর্বল হলে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। দেশের উন্নয়ন শক্তিশালী করতে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন। শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে বিভাজন রেখে দেশের  প্রকৃত উন্নয়ন কখনো হবে না।দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ ছাড়া দেশের  উন্নয়ন  সম্ভব নয় ।বর্তমান সময়ে বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় যে অস্থিরতা বিরাজ করছে তার একমাত্র  সমাধান এনে দিতে পারে সমগ্র বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ।       দেশের উন্নয়নের ধারা সচল রাখতে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ অতীব জরুরি।
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নয়নে ধারায় আনার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর  নিকট বিনীত অনুরোধ রইল।
সমগ্র বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করলে দেশের উন্নয়ন সম্পূর্ণ হবে। দেশ হবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ।
জয় বাংলা  জয় বঙ্গবন্ধু

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.