জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা নিকেতন পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক, বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব প্রয়াত মোহাম্মদ আবুল কাশেম এর ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৪শে জুলাই।
এদিন তাঁর স্মরণে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ পরিবারের সদস্যরা বিশেষ দোয়া মাহফিল ও কোরআন তেলোয়াতের আয়োজন করা হয়। ১৯৩০ সালের ১ জানুয়ারি তিনি বোয়ালখালী উপজেলার আহলা-সাধার পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
জানা যায়, ১৯৪৫ সালে তিনি পি.সি সেন সারোয়াতলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৪৭ সালে কানুনগো পাড়া স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে আই.এ, ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বি.এ এবং ১৯৫৫ সালে বিটি পাশ করেন। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১ম ব্যাচের ছাত্র হিসেবে ইংরেজি শাস্ত্রে এমএ পাশ করেন।
১৯৪৭ সালে পি.সি সেন সারোয়াতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ ২৬ বছর শিক্ষাকতা করে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে নোয়াপাড়া কলেজে যোগদান করেছিলেন।
পরবর্তী ১৯৭৬ সালে পুনরায় পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে ১৯৯১ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯২ সালে হতে ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ শিক্ষাকতা জীবন শেষে ১৯৯৫ সালের ২৪ জুল্ইা চট্টগ্রামের মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। একই সাথে তিনি বোয়ালখালী উপজেলা শিক্ষক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন আদর্শ স্কাউট ছিলেন এবং আমৃত্যু স্কাউটিং এর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি পটিয়া থানার স্কাউটস এর প্রতিষ্ঠাতা কমিশনার ছিলেন এবং আমৃত্যু এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
তিনি একজন ভালো আবৃত্তিকার ও নাট্যকর্মী ছিলেন। সিরাজদ্দৌলা নাটকে ‘জগতশেঠ’, পলাশীর পরে নাটকে ‘মীরজাফর’ এবং বঙ্গে বর্গী নাটকে ‘ভাস্কর পন্ডিত’ এর অভিনয়ে তাঁর অপ‚র্ব নাট্যশেলীর বহি:প্রকাশ ঘটেছিল। তিনি ছিলেন বহু পাঠ্য পুস্তক প্রণেতা ও সংকলক। তবে তিনি আত্ম প্রচারে বিমূখ ছিলেন। সেটাই তাঁর মহিমা। তিনি পটিয়া উপজেলার সূচক্রদন্ডী গ্রাম নিবাসী বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী এবং পটিয়া ক্লাবের ভূমিদাতা ও পটিয়া আবদুর রহমান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোক্তা মরহুম আহমদ কবির মোক্তার (এডভোকেট) এর জ্যেষ্ট জামাতা। তার সন্তান-সন্তুতিরা আজ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপ‚র্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়ে দেশ মাতৃকার কল্যাণে নিবেদিত রয়েছেন।
তার প্রথম পুত্র অধ্যক্ষ জসীম উদ্দীন পশ্চিম পটিয়া এ.জে চৌধুরী ডিগ্রী কলেজ বর্তমানে কর্ণফুলী এজে চৌধুরী ডিগ্রী কলেজৈর অধ্যক্ষ পদে নিয়োজিত আছেন। ২য় পুত্র এ.কে.এম সামশুদ্দীন লাভলু পটিয়া সদরের খলিলুর রহমান মহিলা ডিগ্রী কলেজে ইংরেজী বিভাগে অধ্যাপনায় নিয়োজিত আছেন। ৩য় পুত্র ডা. এস এম মহিউদ্দিন মানিক চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে চিকিৎসা পেশার মাধ্যমে মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।
এবং ৪র্থ পুত্র একেএম মঈনুদ্দিন (খোকন) ইউএনবি ঢাকা অফিসে সিনিয়র ডিপ্লোমেটিক করসপন্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ৫ম পুত্র একেএম আহসান উদ্দিন ডাচ বাংলা ব্যাংক জুবলী শাখায় সিনিয়র অফিসার পদে কর্মরত রয়েছেন। বলতে গেলে পুরা পরিবারেই উচ্চ শিক্ষিত নাগরিকে ভরা। যারা দেশের জনগণ তথা শিক্ষিত মানুষ গড়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আজ তাঁর ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পরিবারের পক্ষ থেকে কোরআন খানি, ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.