এইমাত্র পাওয়া

ইরানের হামলার পর রাফাহতে অভিযান স্থগিত করল ইসরায়েল

ঢাকাঃ ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ইরানের অভূতপূর্ব প্রতিশোধমূলক হামলার পর গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের স্থল অভিযান স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

রবিবার ইসরায়েলি সরকারি সম্প্রচার মাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বাতা সংস্থা আনাদোলু।

আন্তর্জাতিক চাপকে উপেক্ষা করেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে সামরিক অভিযান চালাতে মরিয়া ইসরায়েল। গত সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন রাফাতে হামলার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত সোমবার এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, ‘জয়ের জন্য রাফাহ অভিযান প্রয়োজনীয়। এই অভিযান হবেই। অভিযানের তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।’ তবে নির্দিষ্ট তারিখটি প্রকাশ করেননি নেতানিয়াহু।

সিরিয়ায় ইরানের কূটনৈতিক মিশনে ১ এপ্রিলের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার গভীর রাতে ইসলামিক বিপ্লব গার্ড কর্পস এবং অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েল-অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইরান এই হামলা চালায়। যদিও বেশিরভাগ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে ইরানের হামলার একদিন পরই পিছু হটলেন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলি পাবলিক ব্রডকাস্টার জানিয়েছে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে আলোচনার পর রাফাহতে স্থল অভিযান স্থগিত করা হয়েছে।

এর আগে রবিবার ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী আভিগডর স্মোট্রিচ রাফাহ আক্রমণ এবং সমগ্র গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ আরোপের আহ্বান জানান।

এদিকে ইসরায়েল রাফাহতে সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনার ফলে বৈশ্বিক সমালোচনার মুখে পড়েছে। কারণ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজা উপত্যকার শেষ নিরাপদস্থল হিসেবে সেখানে ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন, যা গাজার মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ। কিন্তু তা সস্ত্বেও রাফাহতে স্থল হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে আসছিলেন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র রাফাহতে হামলার বিরোধীতা করেছে। তারা বলেছে সেখানে পূর্ণমাত্রার কোনো সামরিক আগ্রাসন চালানো হলে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তাও সংকটে পড়বে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যিনি যুদ্ধের সময় ইসরায়েলকে সমর্থন করেছিলেন- তিনিও বলেছেন, রাফাহতে ইসরায়েলি আক্রমণ একটি বিশ্বাসযোগ্য বেসামরিক সুরক্ষা পরিকল্পনা ছাড়াই ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

প্রায় ছয় মাস ধরে ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও ৭৬ হাজার আহতের পাশাপাশি প্রায় ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৪/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.