৩৮ জন শিক্ষকের স্থলে রয়েছেন মাত্র আটজন
গোপালগঞ্জঃ জেলার শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজটি শিক্ষক ও জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে চলছে। ৩৮ জন শিক্ষকের স্থলে রয়েছেন মাত্র আটজন। অতিথি শিক্ষক দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এতে শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
জেলার সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঘোনাপাড়ায় ৮ একর জমির ওপর ১৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত কলেজটি নির্মাণ করা হয়। ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। ওই বছর প্রথম ব্যাচে ১১৪ জন, দ্বিতীয় ব্যাচে ১২০ জন ও তৃতীয় ব্যাচে ১২৩ জনসহ মোট ৩৫৭ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে এ প্রতিষ্ঠানে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষকের অনুমোদিত পদ রয়েছে ৩৮টি। সেখানে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র আটজন। এর মধ্যে তিনজন বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তারা অন্যত্র চলে যাওয়ার প্রহর গুনছেন।
অফিস সহায়ক ও অফিস সহকারীর অনুমোদিত পদ ৩৬টি থাকলেও রয়েছেন আটজন। আউটসোর্সিংয়ের লোকবল রয়েছে ১১ জন। থাকার কথা ১৪ জন। জনবল সংকট কলেজটির লক্ষ্য অর্জনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতিথি শিক্ষক দিয়ে চলছে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম।
শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম ব্যাচের ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম বলেন, সরকার বস্ত্র খাতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ করেছে। রয়েছে বিশ্বের অধুনিক যন্ত্রপাতি সংবলিত ব্যবহারিক ক্লাসের ব্যবস্থা। এ কলেজ প্রতিষ্ঠা সরকারের একটি সুদূরপ্রসারী ও যুগান্তাকারী সিদ্ধান্ত। কিন্তু এ কলেজে শিক্ষকসহ জনবল সংকট প্রকট। এ কারণে আমাদের নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই যে লক্ষ্য নিয়ে সরকার এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে, সেটি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারা শিক্ষক ও জনবল সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বলে তিনি জানান।
কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশরিন সুলতানা বলেন, অতিথি শিক্ষক দিয়ে আমাদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তারা দ্রুত ক্লাস সম্পন্ন করে চলে যান। তাদের পরে ক্যাম্পাসে পাওয়া যায় না। এতে এক ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়। কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক থাকলে এ সমস্যা থাকে না। এই শিক্ষার্থী বলেন, তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের কারিগর হবেন। সেভাবেই পড়াশোনা করে নিজেদের প্রস্তুত করছেন। কলেজে ক্যান্টিন নেই। চলাচলের জন্য ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফুটপাতের ব্যবস্থা করা হয়নি। এখানে নিরাপদ পানির সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যাগুলো সমাধান হলে দেশের সমৃদ্ধিতে এ কলেজটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রায়হানের অভিভাবক রিজভী হাসান রুবেল বলেন, কলেজটিতে শিক্ষক ও জনবল সংকট প্রকট। এ কারণে কলেজে শিক্ষার্থীদের নানামুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ সংকট কাটাতে পারলে কলেজটি অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে বলে তাঁর বিশ্বাস।
কলেজের অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র ঘোষ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অতি আদরের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার নামে এই কলেজ। তাই শিক্ষক ও জনবল সংকটেও মানসম্মত শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখানে শিক্ষক ও প্রয়োজনীয় জনবল দেওয়ার জন্য তিনি একাধিকবার বস্ত্র অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। তারা এ সংকট নিরসনের আশ্বাস দিয়েছে। সমকাল
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৬/০২/২০২৪