স্কুল নয় যেন যমদূত!
শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বারী পুকুরপাড় আহম্মদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের শ্রেণিকক্ষ ও মাঠের সংকটের কারণে কমছে শিক্ষার্থী। এছাড়া ভবনের বেহাল দশায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।
জানা যায়, বারী পুকুরপাড় আহম্মদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে কয়েক যুগ ধরে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। ভবন নির্মাণ করা হবে বলে আশ্বাস দিলেও হচ্ছে না ভবন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। জং ধরা রডগুলো বের হয়ে আছে। অনেক স্থানে ফাটল ধরেছে। এতে করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী শঙ্কায় দিন পার করছে। এছাড়া খেলার মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ না থাকায় দিন দিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
ফাহিম হাসান নামের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, আমাদের ভবনটি পুরাতন। কোনো নতুন ভবন নেই। যদি নতুন ভবন হত তাহলে আমরা একসঙ্গে বসতে পারতাম।
সোহেল হোসেন নামের তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, আমাদের বিদ্যালয়ে কোনো মাঠ নেই। এজন্য আমরা খেলতে পারছি না। আমাদের খেলার জন্য একটি মাঠ চাই।
আবদুল্লাহ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলে, আমাদের খেলার মাঠ-ভবন নেই। আমাদের স্কুল সুন্দর না তাই আমাদের বন্ধুরা স্কুল থেকে মাদরাসায় চলে যাচ্ছে।
সুমাইয়া আক্তার নামের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, আমাদের ওয়াশরুম-ভবন পুরাতন। যদি এসব নতুন করা হয় তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়। আমরা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করি।
স্থানীয় বাসিন্দা আলতাফ হোসেন বলেন, ১৯৯১ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়েছে। সামনে খেলার মাঠ করার জন্য জায়গা ছিল কিন্তু কমিটি জায়গা ক্রয় করেনি। জায়গা কম থাকায় অভিভাবকরা এখানে ভর্তি করাতে রাজি হয় না। এখানে খেলাধুলার কোনো মাঠ নেই।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিল্পী রানী দাস বলেন, জায়গা কম হওয়ায় পাঠদান কক্ষ এবং অফিস ছোট, বসা যায় না। ভবনটি পুরাতন তাই এখন ভেঙে পড়তেছে। আমরা ভয়ে থাকি কখন দুর্ঘটনা হয়। মাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। খেলাধুলা করতে পারলে ছেলে-মেয়েদের কাছে বিদ্যালয় ভালো লাগত।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফি উল্যাহ বলেন, আমাদের পাঠদানের জন্য শ্রেণিকক্ষ সংকট। প্রাক-প্রাথমিকের বাচ্চাদের শ্রেণিকক্ষ নেই। এজন্য পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া অফিসে আমাদের বসার মতো অবস্থা নেই। নতুন ভবন হবে হবে বলেও হচ্ছে না। এটার কারণ একমাত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লাভলি ইয়াসমিন বলেন, কক্ষ সংকট এবং খেলাধুলার মাঠের অভাব রয়েছে। শিশুদের জন্য খেলার মাঠ আকর্ষণীয়। ফলে শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে না। সবাই মাদরাসায় চলে যাচ্ছে। জায়গা আছে কিন্তু জায়গা নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা এ বিষয়ে কথা বলেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতিমা সুলতানা ঢাকাবলেন, বিদ্যালয়টির ভবন এসেছে। আমরা দ্রুত কাজ শুরু করবো। বিদ্যালয়ের পাশে একটি পুকুর আছে যা বিদ্যালয়ের অংশ। আমরা এটি ভরাট করবো, কেননা প্রাক-প্রাথমিকের শিশুদের জন্য পুকুরটি বিপজ্জনক। আমরা চাই সবাই আনন্দের সঙ্গে পাঠদান করুক। কেননা প্রাথমিক হলো মূল ভিত্তি। প্রাথমিক শিক্ষার অনেক গুরুত্ব রয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/৩০/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়