দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
স্কুলে পুনঃভর্তি ফির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়
শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ কুমিল্লার দাউদকান্দির মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে সেশন-পুনঃভর্তি ফি’র নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের মহোৎসব চলছে। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ভর্তি বাণিজ্য রমরমা রূপ নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালা থাকার পরও সেসব পরোয়া করছে না অধিকাংশ বিদ্যালয়। নিজ সন্তানের লেখাপড়ায় ক্ষতি হবে এমন ভয়ে এসব অনিয়ম নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না অভিভাবকরাও।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে যে তথ্য পাওয়া গেছে তা রীতিমতো আঁতকে ওঠার মতো। অভিভাবকদের অধিকাংশই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ভর্তি ফি, পুনঃভর্তি ফি, সেশন ফির পাশাপাশি অনুল্লিখিত খাতেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদায় করছে অতিরিক্ত অর্থ। মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানদের বিদ্যালয়গুলোতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টিকে ‘গলা কাটা’ ফি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বছর বছর এ ফি বাড়ানো হচ্ছে। ফলে হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে মধ্যবিত্তের ‘মিনিমাম কস্টের ম্যাক্সিমাম এডুকেশন’।
২০২২-এ শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যাপারে নীতিমালা জারি হয়েছে বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে। ৮ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে প্রকাশিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভর্তির আবেদন ফরমের জন্য এমপিওভুক্ত, আংশিক এমপিওভুক্ত এবং এমপিওবহির্ভূত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে মফস্বল এলাকায় পাঁচশ টাকা, পৌর এলাকায় (উপজেলায়) এক হাজার টাকার বেশি নেওয়া যাবে না। বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এক ক্লাস থেকে আরেক ক্লাসে ভর্তির ক্ষেত্রে সেশন চার্জ নেওয়ার অনুমতি থাকলেও পুনঃভর্তি ফি একেবারেই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠান এসব নিয়ম ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে নীতিমালায়।
কিন্তু, দাউদকান্দিতে অন্যায্যভাবে পুনঃভর্তিসহ অযৌক্তিক সেশন ফি ও অপ্রদর্শিত খাতে প্রচুর অর্থ আদায় করা হচ্ছে অভিভাবকদের কাছ থেকে। কথা হয় উপজেলার গৌরীপুর এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবকের সঙ্গে। তার এক সন্তান পড়েন ওই এলাকার গৌরীপুর হাইস্কুলে। তিনি জানিয়েছেন তার সন্তান এ বছর নবম থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাকেও পুনঃভর্তি ফি দিয়ে নতুন ক্লাসে ভর্তি হতে হয়েছে। এ বাবদ টাকা কাটা হয়েছে ২২০০ টাকা। তবে এ টাকা কোন কোন খাতে নেওয়া হয়েছে তার ব্যাখ্যা বা রসিদ দেয়নিস্কুল কর্তৃপক্ষ।
একই ঘটনার প্রমাণ মিলেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে। ভর্তি ফি ও পুনঃভর্তি ফির নামে আদায় করা হচ্ছে বড় অংকের টাকা। দাউদকান্দি আদর্শ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, শহিদনগর এমএ জলিল উচ্চ বিদ্যালয়, ইলিয়টগঞ্জ রা.বি. উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক জানান, তাদের সন্তানের পুনঃভর্তিতে আদায় করা হয়েছে দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা। ভর্তি ফি ও সেশন ফি’র নামে এসব টাকা নেওয়া হয়েছে।
দাউদকান্দি আদর্শ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন এবং গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম মিয়া বাড়তি টাকা আদায়ের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
শহিদনগর এমএ জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর ভূইয়া বলেন, অন্যান্য স্কুল যেখানে দুই থেকে আড়াই হাজার নিচ্ছে, সেখানে আমি নিচ্ছি মাত্র ১৫০০ টাকা। অন্যেরা যদি ৫০০ নেয় তাহলে আমিও ৫০০ টাকাই নেব।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম ফজলুল হক বলেন, বেশি টাকা আদায় নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। বিষয়টির খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শিউলি রহমান তিন্নী বলেন, নীতিমালাটি দেখতে হবে। এ নিয়ে শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলব।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/২৮/২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে পেজে লাইক দিয়ে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়।
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
এই বিভাগের আরও খবর