স্কুলের বিদ্যুৎ দিয়ে ঘর চালান শিক্ষক
কুড়িগ্রামঃ জেলার সদরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ দিয়ে নিজ বাড়িতে বিদ্যুতের ব্যবহার করছেন সহকারী এক শিক্ষক। সেই বাড়ির বিদ্যুতের খরচও মেটাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
সরকারি স্কুলের সংযোগ থেকে নিজ বাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ঘটনাটি ঘটিয়েছেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়নের পরমালী (বড়ভিটা) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রওশনারা বেগম। তিনি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়নের পরমালী বড়ভিটা গ্রামের বাসিন্দা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরমালী (বড়ভিটা) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রওশনারা বেগমের বাড়ির বিদ্যুৎ বিল ১৪ হাজার টাকা বকেয়া থাকায় সংযোগ কেটে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিদ্যুৎ বিল ১৪ হাজার টাকা বকেয়া থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন সহকারী শিক্ষক রওশনারা বেগমের স্বামী জলিলুর রহমান।
স্কুল কমিটির সভাপতির অভিযোগ, সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার অজুহাত ও স্কুল কমিটির সাবেক সভাপতি স্বামীর ক্ষমতার জোরে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নেন রওশনারা। প্রায় ৫০০ মিটার দূরে স্কুল থেকে নিজ বাড়িতে তিন মাস ধরে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মইনুল হোসেন বলেন, ‘অবৈধভাবে নিজ বাড়িতে বিদ্যুৎতের সংযোগ নেয়া অপরাধ। সেখানে একজন শিক্ষক কীভাবে নিজ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিল, এটা আমাদের বুঝে আসে না।
‘একজন শিক্ষক হয়ে যদি এমন আইনবিরোধী কাজ করে, তাহলে স্কুলের বাচ্চাদের তিনি কী শিক্ষা দেবেন?’
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক রওশনারা বেগম বলেন, ‘আমি বিদ্যুৎ অফিসকে জানিয়েছি; কোনো সমস্যা নাই। নতুন মিটার পেলে স্কুলের বিদ্যুৎ আর ব্যবহার করব না।’
পরমালী (বড়ভিটা) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি রাকিব হোসেন বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বাড়িতে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ অফিস লাইন কেটে দিয়েছে। এ ছাড়া ওই শিক্ষকের স্বামী জমিদাতা ও সাবেক সভাপতি থাকায় জোর করে আমাদের না জানিয়ে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন। তিন দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ না কাটলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি মানবিক কারণে দুই-এক দিনের জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছি। পরে অনেকবার ওই শিক্ষককে সংযোগ বন্ধ করতে বলেছি, কিন্তু তিনি আজ-কাল করে অজুহাত দেখিয়ে আমার কথায় আর ভ্রুক্ষেপ করছেন না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি।’
কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। আমরা এখনই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি একজন অভিভাবকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৭/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়