সেন্ট্রাল হাসপাতাল ঘেরাওয়ের ঘোষণা ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের
ঢাকাঃ রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার শিকার মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুর ঘটনায় সেন্ট্রাল হাসপাতাল ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছেন নিহতের সহপাঠীরা। একইসঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেন্ট্রাল হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল এবং ডা. সংযুক্তা সাহাকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছেন তারা।
আজ রবিবার (১৮ জুন) ল্যাবএইড হাসপাতালে অবস্থান করা আঁখির সহপাঠী ও ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেয়।
তারা জানায়, সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতারণা, ভুল চিকিৎসায় তাদের সহপাঠী আঁখি ও তার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ী কয়েকজন চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন মূল হোতা ডাক্তার সংযুক্তা সাহা। একই সঙ্গে এ ঘটনায় মূল দায়ী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এসময় তার সহপাঠীরা ডা. সংযুক্তা সাহার লাইসেন্স বাতিল ও গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। সেই সঙ্গে সংযুক্তা সাহা যাতে বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে তার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায়। এ ছাড়াও সেদিন অপারেশনের সময় যারা উপস্থিত ছিল সকলের লাইসেন্স বাতিলেরও দাবি জানানো হয়।
এর আগে, আজ দুপুর সোয়া ২টার দিকে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আঁখির মৃত্যু হয়।
সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সংযুক্তা সাহার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নরমাল ডেলিভারির তথ্য পেয়ে গত ৯ জুন কুমিল্লা থেকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে আসেন আঁখি। কিন্তু সেদিন ডা. সংযুক্তা সাহার বদলে ওই নারীর ডেলিভারি করতে যান ডা. মিলি।
এ সময় ডা. মিলি ওই প্রসূতির পেট কাটতে গিয়ে মূত্রনালি ও মলদ্বার কেটে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় সিজার করে বাচ্চা বের করা হয়। এতে বাচ্চার হার্টবিট কমে গেলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে।
পরবর্তীতে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে আঁখিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। তবে তার কোনো ইমপ্রুভমেন্ট ছিল না। চিকিৎসকরাও জানিয়েছিলেন, আঁখির ইমপ্রুভমেন্ট হওয়ার সম্ভাবনাও কম। তার শরীরের কিডনি, লিভার, হার্ট এবং অন্য কোনো অংশ কাজ করছিল না। এরমধ্যে ব্রেন স্ট্রোকও করেন আঁখি, সেই সঙ্গে রক্তক্ষরণও বন্ধ হচ্ছিল না তার। ফলে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ার কারণে শরীরের অন্য অংশগুলো কাজ করতে ব্যর্থ হয়ে পড়েছিল। এতে হাসপাতালে ভর্তির পুরো সময় তাকে রক্ত দিতে হয় এবং যতক্ষণ পর্যন্ত তার নিশ্বাস চলবে ততক্ষণ পর্যন্ত রক্ত দিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।
এর আগে গত বুধবার (১৪ জুন) এজাহারনামীয় দুই আসামি ডা. মুনা সাহা ও ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানাকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার সেন্ট্রাল হাসপাতালে অভিযান চালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানে হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় বেশকিছু ঘাটতি দেখতে পান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। জরুরি চিকিৎসায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় আইসিইউসহ প্রতিষ্ঠানটিতে সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধের নির্দেশ দেয় অধিদপ্তর। পাশাপাশি ডা. সংযুক্তা সাহাকে ওই প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ সেবা দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৬/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়