সহকারি শিক্ষকের টাকা আত্মসাৎ করলেন প্রধান শিক্ষক!
শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচং একতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান চোকদারের বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে গত ২০ মার্চ হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শামছুর রহমান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক শামছুর রহমান ২০০২ সালে একই তারিখে নিয়োগ লাভ করেন। পরে সহকারী শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার আশ্বাসে তাঁর কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা নেন প্রধান শিক্ষক। এমপিওভুক্ত না হতে পেরে এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে টাকা ফেরত চান শামছুর রহমান। কিন্তু তাঁর রহমানের টাকা ফেরত না দিয়ে নানা অজুহাতে টালবাহানা করতে থাকেন আব্দুল মান্নান চোকদার। দুই দশকেরও বেশি একতা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করলেও এখনও এমপিভুক্ত হতে পারেননি শামছুর রহমান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আব্দুল মান্নান চোকদার ধারবাবদ ৪৭ হাজার টাকা নেন শামছুর রহমানের কাছ থেকে। যা এখনও তিনি ফেরত দেননি। ভুক্তভোগী শিক্ষকের কাছে এসব আর্থিক লেনদেনের অডিও রেকর্ড রয়েছে বলে জেলা প্রশাসকের কাছে করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
জানা গেছে, শামছুর রহমান নিয়মতান্ত্রিকভাবে সহকারী (ইংরেজি) শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এমপিওভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন অনুযায়ী বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে মাসিক ১০ হাজার টাকা করে তিনি ভাতা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কোনো কারণ ছাড়া ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শামছুর রহমানের ভাতা বন্ধ করে দেন। এতে পরিবার নিয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এদিকে এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ভুক্তভোগী শিক্ষক নিরুপায় হয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করেন। গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক-২) মো. তরিকুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান চোকদারকে শামছুর রহমানের নিয়োগ-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র অধিদপ্তরে প্রদর্শনের জন্য চিঠি ইস্যু করলে ও অদ্যাবধি তিনি কোনো কাগজপত্র পাঠাননি।
এদিকে বিদ্যালয়ের ক্লোজ করা হিসাব বারবার কাটাছেঁড়া করে টাকার পরিমাণ বাড়ানো, একই খাতে আগে-পরে টাকা কমবেশি দেখিয়ে বারবার ভাউচারের অর্থ আত্মসাৎ এবং ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন বাবদ অর্জিত আয়ের ৪৪ হাজার টাকার হিসাব দিতে না পারাসহ আব্দুল মান্নান চোকদারের বিরুদ্ধে অনেকগুলো আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন শামছুর রহমান।
জানতে চাইলে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উছমান মিয়া জানান, সহকারী শিক্ষক শামছুর রহমানের এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিদ্যালয়ের হিসাব-নিকাশ সব ঠিক আছে, কোনো সমস্যা নেই।
অভিযুক্ত একতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান চোকদার জানান, শামছুর রহমানের সব একাডেমিক সনদ তৃতীয় বিভাগ থাকায় তাঁকে এমপিওভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাঁর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টা সম্পূর্ণ বানোয়াট।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল হক জানান, তিনি এই অফিসে নতুন যোগদান করেছেন। আব্দুল মান্নান চোকদারেরর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কপি এখনও তাঁর কাছে পৌঁছায়নি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৬/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়