সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ অস্বীকার করলেন প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী
নিজস্ব প্রতিবেদক, পটুয়াখালীঃ মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলারকলাপাড়ায় মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী ভৌমিক। শুক্রবার বেলা ১১টায় কলাপাড়া প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌহিদুর রহমান মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এর আগে অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার (২০) জুলাই 'প্রাইভেট পড়লে ৯০ নাম্বার দিতেন প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি!' শিক্ষাবার্তা'য় সংবাদ প্রকাশ করে।
সংবাদ সম্মেলনে তৃপ্তি রানী ভৌমিক তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার বড় চাচা প্রফুল্ল মন ভৌমিক একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। আমার বাবা প্রশান্ত মন ভৌমিক ১৯৭৫ সাল পরবর্তী সময়ে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পিভি মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি আমার বড় চাচার নামে প্রতিষ্ঠিত। ওই বিদ্যালয়টির জমিদাতাও আমাদের পরিবার। শুধু তাই নয়, নীলগঞ্জ ইউনিয়নে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন পরিষদসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় আমাদের পরিবারের অবদান রয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর জমিও আমাদের পরিবার থেকে দানকৃত। আমি ব্যক্তিগত জীবনে মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক। এ বিদ্যালয়ে আমি ২০১০ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি।
শিক্ষক হিসেবে আমি ৩৩ বছর পার করেছি। এ দীর্ঘ সময়ে আমি সুনামের সঙ্গেই চাকরি করেছি। আমার কর্মকা লীন সময়ে ২০১১ সালে মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পটুয়াখালী জেলায় ‘শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ’ নির্বাচিত হয়েছে। ২০১৬ সালে আমি উপজেলা পর্যায়ে ‘শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক’ নির্বাচিত হই। ২০১৯ সালে এ বিদ্যালয়টি গুণগত শিক্ষা, পরীক্ষার ফলাফল, শিক্ষার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা বৃদ্ধি, শতভাগ ভর্তি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সার্বিক দিক বিবেচনায় বরিশাল বিভাগের মধ্যে ‘শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়’ নির্বাচিত হয়। এমনকি আমার সুনাম ও দক্ষতার জন্য উপজেলা শিক্ষা কমিটিতেও আমাকে ‘সদস্য’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি, তৃণমূল পর্যায়ে গুণগত প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তার, বিদ্যালয়ে গুণগতমানের শিক্ষা প্রদান করেও আমার বিরুদ্ধে একটি মহল বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে। তিনি মহিপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল ওহাব হাওলাদার, মো. মঞ্জুরুল আহসানসহ একটি মহলকে দায়ী করেন।
আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে আমাকে এবং আমার সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমীনকে সরিয়ে দিতে। সেখানে অন্য একজন প্রধান শিক্ষকসহ একজন সহকারী শিক্ষককে বসানোই হলো ওই মহলটির একমাত্র উদ্দেশ্য। আমি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি। অভিযোগকারী আবদুল ওহাব হাওলাদার বলেন, আমার মেয়ে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। ওই স্কুলের শিক্ষক মো. রুহুল আমীন তার কাছে যারা প্রাইভেট পড়েছে তাদেরকে সে আলাদা কক্ষে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে ফলাফলেও বিশেষ সুবিধা দেয়। প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনি বিষয়টি না দেখে ওই শিক্ষককে এ সকল কাজে সহযোগিতা করেন। ভবিষ্যৎ অন্য কোনো শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন না হয় তার প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দিয়েছি। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন বলেন, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে তদন্তসাপেক্ষে তার আসল ঘটনা বের হয়ে আসবে। আমিও চাই সত্যটা বের হোক। তখন সবকিছু স্পষ্ট হলে অনিয়মকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২০/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়