শোকজের জবাব দিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেই শিক্ষক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের শোকজের জবাব দিয়েছেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষক আসহাব উদ্দীন। গতকাল দুপুরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদকে ডাক বিভাগের মাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে এ জবাব দেওয়া হয়।
এর আগে গত সোমবার প্রমাণ ছাড়া উপাচার্য শিরীণ আখতার ও তাঁর মেয়ে রিফাত মোস্তফার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলায় আহসাব উদ্দীনকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। সাত কর্মদিবসের মধ্যে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পেনশন স্থগিতসহ কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার জবাব চাওয়া হয়েছিল।
এ শোকজের জবাবের চিঠিতে আহসাব উদ্দীন উল্লেখ করেন, তিনি ১৯৮০ হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি কলেজ আর শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী শিক্ষক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক, একাডেমিক কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে তাঁর পেশাগত কোনো সম্পর্ক নেই।
চিঠিতে আসহাব উদ্দিন আরও বলেন, গত ২ জানুয়ারি ও ১৪ মার্চ রিফাত মোস্তফাকে দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা পাওনা বাবদ যে চিঠি দিয়েছিলেন তা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পাওনা সম্পর্কিত। রিফাত মোস্তফা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পদে যুক্ত নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তিনি কোনোভাবে সম্পৃক্ত নন। তিনি (আহসাব উদ্দিন) তাঁর টাকা চাওয়ার চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পৃক্ত করেননি।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কারও ব্যক্তিগত লেনদেনের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাডে বেআইনি চিঠি ইস্যু করার ক্ষমতা আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় দেয়নি। আপনি সম্পূর্ণ এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমার মাসিক পেনশন স্থগিত করে সামাজিক হয়রানি ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে বেআইনি হুমকি দিয়েছেন যা আইনের চোখে একটি অপরাধ।
গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো চিঠি প্রত্যাহার চেয়েছেন আহসাব উদ্দীন। তিনি ওই চিঠিকে বেআইনি উল্লেখ করে বলেন, চিঠি প্রত্যাহার না করলে আইনের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হবেন।
এর আগে ১৪ মার্চ ‘পাওনা’ টাকা ফেরত চেয়ে উপাচার্য শিরীণ আখতারের কন্যা রিফাত মোস্তফাকে চিঠি দিয়েছিলেন আহসাব উদ্দীন। এতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, রিফাত মোস্তফা আহসাব উদ্দীনের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। এ ছাড়া উপাচার্য শিরীণ আখতারকেও এক লাখ টাকা এতিমখানায় দান করার জন্য দিয়েছিলেন। বর্তমানে তাঁর আর্থিক অবস্থা সংকটাপন্ন। তাই তিনি ওই আড়াই লাখ টাকা ফেরত চান।
ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আহসাব উদ্দীনকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নুরুল আজিম সিকদার হাটহাজারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে আহসাব উদ্দীনের উদ্দেশে বলা হয়, ‘১৪ মার্চ উপাচার্য শিরীণ আখতার ও তাঁর কন্যা রিফাত মোস্তফা সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/৩১/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়