শিক্ষার্থী একজন শিক্ষক চারজন
ময়মনসিংহঃ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষে কোনো শিক্ষার্থী নেই। দ্বিতীয় বর্ষে শিক্ষার্থী মাত্র একজন। তবে এই বিভাগে শিক্ষক সংখ্যা চারজন। মাত্র একজন শিক্ষার্থীর জন্য চার শিক্ষককে বেতন দিয়ে যাচ্ছে নান্দাইল উপজেলার মুশুলী ডিগ্রি কলেজ। বিগত বছরগুলোতেও চার থেকে পাঁচজনের বেশি শিক্ষার্থী ছিল না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নান্দাইল শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে মুশুলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৯৫ সালে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাক্রম চালু হয়। তখন প্রতিষ্ঠানটির সাময়িক নামকরণ হয় মুশুলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সম্প্রতি কলেজ শাখা আলাদা একটি ভবনে স্থানান্তরিত হয়ে মুশুলী ডিগ্রি কলেজ নাম ধারণ করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকা মইনুল হোসেন আরজু গত ৭ মার্চ অবসরে যান। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে আছেন আশরাফ উদ্দিন। সব মিলে শিক্ষক রয়েছেন ১৬ জন।
গত সোমবার দুপুরে কলেজে গিয়ে জানা যায়, মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষে চলতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে ৩০৪ জন, বাণিজ্য বিভাগে তিনজন। মানবিকের দ্বিতীয় বর্ষে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩২০ জন আর বিএমটি (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজি) বিভাগে ১৪৭ জন। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। দ্বিতীয় বর্ষে আছে মাত্র একজন শিক্ষার্থী। তবে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছেন চারজন শিক্ষক।
অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থী না থাকায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা নিয়মিত আসেন না। এলেও হাজিরা দিয়েই চলে যান তারা।
মানবিক শাখার দুই শিক্ষার্থী জানায়, বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থী নেই। তাই ক্লাস হয় কিনা, সেটা জানে না তারা।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আশরাফ উদ্দিন জানান, তিনি নিজে গণিতের শিক্ষক। পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে একজন করে শিক্ষক রয়েছেন। তবে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর অভাব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এ কারণে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী বৃদ্ধি করার কোনো সুযোগ তাদের হাতে নেই।
বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী না থাকার কারণ জানালেন কলেজ কমিটির সভাপতি শফিকুর রহমান। তাঁর মতে, গ্রামাঞ্চলে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কম থাকে। দু-চারজন থাকলেও এসএসসি পাস করার পর শহরে চলে যায়। গ্রামের কলেজগুলো বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী না পাওয়ার এটাই বড় কারণ।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রওশন আরা খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের প্রতিটি শাখায় একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকতে হয়। মুশুলী ডিগ্রি কলেজে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী না থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুধবার একটি মিটিং হয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২০/০৩/২০২৪