শিক্ষার্থীকে নির্যাতন, শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি
দিনাজপুরঃ জেলার ফুলবাড়ীতে একটি মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শিশুর মা নাসরিন বেগম।
গত বুধবার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি বাজারের রাঙ্গামাটি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ বেলাল (৫০) শিশু শিক্ষার্থী রনি মিয়াকে (৯) শারীরিক নির্যাতন করেন।
এ ঘটনায় তার বাবা আব্দুস সালাম থানায় অভিযোগ করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন; কিন্তু শিশু রনির মা নাসরিন বেগম অভিযুক্ত শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
নির্যাতিত শিশুর বাবার প্রত্যাহারকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তার ছেলে রনি মিয়া ফুলবাড়ীর রাঙ্গামাটি বাজারের রাঙ্গামাটি হাফিজিয়া মাদ্রাসার নূরানী বিভাগে পড়াশোনা করে। বুধবার দুপুরে রনি কান্নাকাটি করতে করতে বাড়িতে আসে।
তার কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে সে জানায়, দুই দিন মাদ্রাসায় না যাওয়ায় অন্য ছাত্রদের সহায়তায় ক্রিকেট স্ট্রাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করেন শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসায় গেলে অহেতুক দাঙ্গা-হাঙ্গামা হতে পারে ভেবে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে রনির বাবা বিকালে ফুলবাড়ী থানায় অভিযোগ করেন।
এদিকে রনির বাবা ফুলবাড়ী থানায় অভিযোগ করতে গেলে মাদ্রাসার সভাপতি শাহাদত হোসেন ও ফুলবাড়ী গোলাম মোস্তফা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হক মাদ্রাসার সুপার হাফেজ বেলালকে বহিষ্কারের মিথ্যা আশ্বাস দেন। পরে রনির বাবাকে দিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করিয়ে নেন তারা।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষার্থী রনি মিয়া ঈদের আগে ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে তার বাড়ি শিবনগর ইউনিয়নের দাদপুর, মালিপাড়া গ্রামে যায়। এ ছুটি কাটানোর পর আরও দুদিন ছুটি কাটায়। অতিরিক্ত দুদিন ছুটি কাটানোর কারণে ২০০ টাকা জরিমানা করেন মাদ্রাসার সুপার হাফেজ বেলাল। শিশু রনি সেই টাকা দিতে না পারায় সুপার তিন শিক্ষার্থীকে রনির হাত চেপে ধরতে বলে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে রনিকে পেটায়। রনির চিৎকারে তাকে ছেড়ে দেয় সুপার। রনি বাসায় ফিরলে তার মা ও বাবা ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে ডাক্তার তাকে চিকিৎসা দেন।
রাঙ্গামাটি হাফিজিয়া মাদ্রাসার সুপার হাফেজ বেলাল নিজের দোষ স্বীকার করে বলেন, আমি ছেলেটাকে মেরেছি। তবে আমার সভাপতি সেই ছেলের বাবাকে আর্থিক সুবিধা দিলে শিশুটির বাবা আব্দুস সালাম থানায় করা তার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন।
মাদ্রাসার সঙ্গে জড়িত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, মাদ্রাসার কমিটি আছে। কমিটিকে না জানিয়ে কোনো প্রকার মিটিং না করে গোপনে সভাপতি ও সুপার টাকা খরচ করতে পারেন না।
আব্দুস সালামের অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়ে ওসি আশরাফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, শিশুর বাবা আমার কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন। আবার ঘণ্টাখানেক পরে সেই অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। তবে যেভাবে শিশুটিকে নির্যাতন করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। তবে অভিযোগ না থাকায় আমাদের কিছু করার নাই।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৬/০৫/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তা’য়