শিক্ষকের ইচ্ছায় স্কুলের ছাদে ফুলের বাহার
নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুরঃ পিটুনিয়া, জারবেরা, স্নোবল, নীলমণি, রুয়েলিয়া, গাঁদা ফুলে ছেয়ে আছে ছাদ। সুসজ্জিত এক বাগান। আছে দেয়ালচিত্রও।
সব মিলিয়ে তিন শতাধিক ফুল ও ফলের গাছ। বলছিলাম দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বারাই আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ বাগানের কথা। ২ হাজার ৪০০ বর্গফুটের এ ছাদ ফুল ও ফলে ভরে উঠেছে সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান মিজানের পরিকল্পনায় এবং সকল শিক্ষকের একান্ত প্রচেষ্টায়।
বাগানে তিনশতর বেশি টবে শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের ফুল, আছে ফলের গাছও, যা রোপণ করেছেন মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি স্কুল ছুটির পর পরিচর্যা করেন এ বাগানের। তিনি জানালেন, গাছের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ বাগান গড়ে তোলা। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের তিনি বিভিন্ন ফুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
২০১২ সালে মোঃ মিজানুর রহমান অত্র বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরে নিজ উদ্যোগে প্রধান শিক্ষক স্বপ্না রায়কে জানান তার বাগান করার পরিকল্পনা। তাতে সায় মেলে। ফলে এখন ছাদজুড়ে পিটুনিয়া, জারবেরা, স্নোবল, নীলমণিলতা, রুবেলিয়া, রুয়েলিয়া, গাঁদা ফুলের রাজত্ব। আছে আম, জাম, পেয়ারা, লেবু, আমলকী, কলা, আতা, ড্রাগন, বরইসহ নানা ধরনের ফলের গাছ।
সহকারী শিক্ষক ইতি আরা জানান,অত্র বিদ্যালয়ের কোমল মতি শিশুদের গাছের পরিচর্যা হাতে-কলমে শেখানো হয়। আচরণ এবং পরীক্ষার ফলা ফল ভালো করলে ফুল ও ফলের গাছ উপহার দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের।
প্রধান শিক্ষক স্বপ্না রায় বলেন, গ্রীষ্মকালে স্কুল ভবন গরম হয়ে ওঠে। তাই তপ্ত ছাদ ঠান্ডা রাখতে এবং গাছের প্রতি ভালোবাসা থেকেই মিজান স্যারকে সহযোগিতা করি।
প্রধান শিক্ষক জানান, গাছ রোপণের জন্য যে টব ব্যবহার করা হয়েছে তা বাজার থেকে না কিনে মোঃ মিজানুর রহমান নিজেই বিদ্যালয় ছুটির পর এবং সাপ্তাহিক ছুটিতে তৈরি করেছেন। এই কাজে আমি এবং আমার সহকারী সকল শিক্ষক সহযোগিতা করেছেন। তিনি বলেন, কোমল মতি শিশুরা স্কুলে পড়তে এসে বিভিন্ন ফুল ও ফলের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে–এটি অনেক আনন্দের বিষয়।
দিনাজপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানালেন, জেলা শহরের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়েও ছাদ বাগান গড়ে তুলছেন অনেকেই। সেসব বাগানে ফুল ও ফল উৎপাদন হচ্ছে। এখান থেকে অনেকেই তা আবার বাজারে বিক্রি করছেন। এ ধরনের বাগানের বিকাশে তারা নানা পরামর্শ দিচ্ছে।